Ajker Patrika

আদালতের আদেশ অমান্য, প্রবেশন কর্মকর্তার ১ দিনের কারাদণ্ড

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ৩৬
গোলাম রব্বানী। ছবি: সংগৃহীত
গোলাম রব্বানী। ছবি: সংগৃহীত

আদেশ অমান্য ও সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা না দেওয়ায় কুড়িগ্রাম সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীকে এক দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানাও জারি করেছেন আদালত।

গত ১৩ মার্চ কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সদর আমলি) সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়া এই আদেশ দিলেও বিষয়টি এত দিন গোপন ছিল। আজ শনিবার আদেশের একটি কপি আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের হাতে আসে।

আদালত সূত্র জানায়, আদালত প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীকে একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তিনি প্রতিবেদন দাখিল করেননি।

এ জন্য কেন তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এবং কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁর কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ করা হবে না, তা চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি লিখিত ব্যাখ্যাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই তারিখেও লিখিত ব্যাখ্যা কিংবা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেননি। এমনকি তিনি সময়ের আবেদনও করেননি।

পরে আবারও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, তা সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যাসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২২ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও গোলাম রব্বানী আদালতে সশরীরে হাজির কিংবা লিখিত ব্যাখ্যাসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেননি।

দণ্ডাদেশে আদালত বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার এ ধরনের কার্যকলাপ আদালতের বৈধ আদেশের প্রতি অবজ্ঞার শামিল ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ৪৮৫ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. গোলাম রব্বানী, প্রবেশন কর্মকর্তা, প্রবেশন কর্মকর্তার কার্যালয়, কুড়িগ্রাম সদর, কুড়িগ্রামকে এক দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো। গ্রেপ্তার কিংবা আত্মসমর্পণের দিন থেকে সাজার মেয়াদ শুরু হবে।

এ বিষয়ে বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বলেন, আদালত প্রবেশন কর্মকর্তাকে এক দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তিনি পলাতক থাকায় সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যথাযথ মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সদর থানায় পাঠানো হয়েছে। তবে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল্লাহ বলেন, ‘ওয়ারেন্টের কপি এখনো আমাদের হাতে পৌঁছায়নি।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রবেশন কর্মকর্তা মো. গোলাম রব্বানীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ার তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ডিডি) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রবেশন কর্মকর্তাকে দেওয়া সাজার বিষয়টি জানা নেই। এর আগে আদালতের আদেশ অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে। তাঁকে শোকজও করা হয়েছে। গোলাম রব্বানী নিয়মিত অফিস করেন না। ইচ্ছামতো আসেন-যান। তিনি কারও কাছে জবাবদিহিও করেন না। এ জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত