Ajker Patrika

বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র, কুড়িগ্রামে পানিবন্দী হাজারো মানুষ 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০: ০০
বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র, কুড়িগ্রামে পানিবন্দী হাজারো মানুষ 

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বুধবার সকাল ৯টায় চিলমারী ও নুনখাওয়া পয়েন্টে এই নদের পানি বিপৎসীমার যথাক্রমে ৯ সেন্টিমিটার ও ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে এর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েকটি উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানিও। 

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এ সময়ে উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। 

পূর্বাভাস কেন্দ্রের বার্তায় এখনই ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেওয়া না হলেও এই নদের পানি বিপৎসীমার অতিক্রম করে জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে শত শত পরিবার। আজ বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার সব কটি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এ সময় ওই পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। একই সময়ে এই নদের পানি নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধরলার পানি কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার এবং দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৬০ মিটারে পৌঁছেছে। রাতভর তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। 

ব্রহ্মপুত্রে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলি মুসার চর, ব্যাপারিপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চরের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের সদস্যরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। রান্না, খাওয়া সবকিছু চলছে নৌকাতেই। তবে শৌচাগার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দী মানুষজন।
 
বতুয়াতলি মুসার চরের বাসিন্দা শরিফুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ৪০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস। সব কটি পরিবারের ঘরের ভেতর পানি। বাইরে চারপাশে পানি। পানি বাড়তে আছে।’ 

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে অনেক ঘরের ভেতরেই পানি ঢুকেছে। ছবি: আজকের পত্রিকাউলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দী পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। এ ছাড়াও দুর্গত পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ 

জেলা সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র বিধৌত বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কালির আলগা ও গোয়াইলপুরির চরে গত দুই দিনে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানকার বেশ কিছু পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। 

গোয়াইলপুরির চরের বাসিন্দা মাহবুব বলেন, ‘পরিস্থিতি খারাপ। বন্যার কবলে পইড়া গেছি। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকতাছে। এলাকার অনেক বাড়িঘরে পানি।’
 
কালিরআলগার বাসিন্দা হোসেন বলেন, ‘চরে নিচা জায়গার ঘরে (পরিবারে) পানি ঢুকছে। পানি বাড়লে আরও ঘরবাড়িতে পানি ঢুইকা পড়বো।’ 

পুরান কালির আলগা গ্রামের বাসিন্দা পল্লি চিকিৎসক আনছার আলী বলেন, ‘অবস্থা খারাপ। দুই দিনে তিন হাত পানি বাড়ছে। বেশির ভাগ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যায় নাই।’ ওই গ্রামে অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি। 

উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নসহ চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী অঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়ছে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা।
 
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জেলা জুড়ে ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবারও পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে আমরা সেদিকে বাড়তি নজর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত স্ত্রীর মৃত্যু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত আজেদা বেগম (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার দিবাগত রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে গত মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের এমপি পাড়ায় ছুরিকাঘাতের এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত স্বামী শামীম মিয়া (৪২) গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের বেতগারড়া গ্রামের মাফু মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক।

নিহত আজেদা বেগম উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের রাজা মিয়ার মেয়ে। আট বছর বয়সী ছেলে আতিক ও ১৬ বছর বয়সী মেয়ে সোনিয়াকে নিয়ে তাঁরা কোনোমতে জীবন যাপন করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভাবের সংসারে আজেদা অন্যের বাসায় কাজ করতেন। শামীম হোটেলে কাজ করলেও নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্তি ও মোবাইল ফোনে জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়েন। এসব নিয়ে দাম্পত্য জীবনে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত নারীর মৃত্যুর খবর স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকের সর্বনাশ: ভেজাল কীটনাশকের অভিযোগ

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের এই সময়ে যখন কৃষকের মাঠভরা ধান দেখে আনন্দের নিশ্বাস ফেলার কথা, তখন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর-তেরাইল মাঠের রোপা আমনচাষি মিরাজুল ইসলামকে হতাশা নিয়েই ছুটতে হচ্ছে মাঠে। কারেন্ট পোকার (ঘাসফড়িং) আক্রমণে তাঁর দেড় বিঘা জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এত কষ্টের সব ধান আমার নষ্ট হয়ে গেল। মাঠে আমার ধান ছিল সেরা, এখন একেবারে জিরো। কীটনাশক প্রয়োগ করে অনেকের সেরে গেছে, কিন্তু আমি সব ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাইনি। আমার এতটাই ক্ষতি হয়েছে, যা কল্পনা করা যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে তেমন সঠিক কোনো দিকনির্দেশনাও পাইনি। কৃষি অফিস থেকে যদি সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যেত কোন কীটনাশক ব্যবহার করলে ভালো হবে, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজুরি খরচ, সার ও কীটনাশকের বাড়তি দামে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যেই আমনে কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পোকার আক্রমণে কৃষক মিরাজুল ইসলামের ধানের গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে শুধু খড় দেখা যাচ্ছে। যেটুকু আছে, তা-ও দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় চাষি আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আগে থাইডন, বাসোডিনের মতো বিষ ছিল, যা প্রয়োগ করলে সঙ্গে সঙ্গে কাজ হতো। কিন্তু এখনকার বিষে কোনো কাজ হয় না, এগুলো ভেজালে পরিপূর্ণ। বিষ কোম্পানিগুলো আসলে কী বিষ দেয়? এভাবে চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোথায় যাবে?’

আরেক ধানচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিরাজ নামের এই চাষির ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে বিচালি (খড়) করাও সম্ভব না। ধানের জমি খড়ের মতো হয়ে গেছে। এই মাঠে তার ধান অত্যন্ত সুন্দর হয়েছিল এবং সে তার ধানের প্রতি খুবই যত্নবান ছিল। সে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত মিয়া বলেন, ‘রোপা আমন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে এনেছি পুরোপুরি। বাজারে বিভিন্ন ভেজাল কীটনাশক রয়েছে। এর মধ্য থেকে আসলটা বাছাই করে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব উপসহকারী রয়েছে, তাদের বলা আছে কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের দিকে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যপাড়া (মণ্ডলপাড়া) গ্রামে মুসা নামের এক ব্যক্তির নারকেলগাছে উঠেছিলেন আসলাম। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের নিচে ডাবসহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ, অবস্থা গুরুতর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন— কারখানাটির শ্রমিক আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), মো. সেলিম (৩৫), মো. জালাল মোল্লা (৪০), মো. নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

দগ্ধরা জানান, সকালে কারখানার নিচতলায় বয়লার রুমে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই সেই কক্ষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ৬ জনের শরীর ঝলসে যায়। সহকর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের সবার অবস্থাই গুরুতর। কার শরীরে কত শতাংশ পুড়েছে তা পরবর্তীতে বলা যাবে।

ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, সকালে এসএম ডাইং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কারাখানা থেকে কোনো তাদের (ফায়ার সার্ভিস) বিস্ফোরণের সংবাদ জানানো হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় কারখানাটির বেশ কয়েক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হয়েছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত