Ajker Patrika

জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দল হবে না, লিডারশিপ তৈরি করবে: সারজিস আলম

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০: ২১
Thumbnail image
সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দল হবে না, লিডারশিপ তৈরি করবে। আজ শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি অডিটরিয়ামে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে একাধিক রাজনৈতিক দল আসবে। তবে জাতীয় নাগরিক কমিটি কখনো কোনো রাজনৈতিক দল হবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। রাজনৈতিক দল রেজিস্ট্রেশন করে সরাসরি রাজনীতি করে ভোটের নির্বাচনে যায়। জাতীয় নাগরিক কমিটি আগামীর বাংলাদেশে লিডারশিপ তৈরি করবে। জবাবদিহিতায় জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রেশার ক্রিয়েট গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে।’

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দেশে লিডার তৈরি হয়নি, তৈরি হয়েছে কিছু দাস আর নীরব কিছু দর্শক। আগামীর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উন্নয়ন করতে চায়, তাহলে আগে আমাদের লিডার তৈরি করতে হবে। লিডার হিসেবে যাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও জ্ঞান থাকবে। লিডার হিসেবে এই মানসিকতা থাকবে যে কেউ অনুসারী না, সবাই সহযোদ্ধা। এই অভ্যুত্থানে যারা ছিল, তাদের নিয়েই হয়তো এই রাজনৈতিক দল আসবে।’

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘তবে যারা রাজনৈতিক দলে যাবে, তারা নাগরিক কমিটিতে থাকতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ যদি ওই রাজনৈতিক দলে যেতে চায়, তাহলে তাকে তার সব পদ ছেড়ে যেতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার জায়গাতেই থাকবে। আবার যদি কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে, তার বিরুদ্ধে আবারও এখান থেকেই যে কেউ আন্দোলনের ডাক দিতে পারবে।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির এই মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘একটা সিস্টেম ধ্বংস করতে সময় লাগে না। কিন্তু গড়তে সময় লাগে। আমরা তাৎক্ষণিক রেজাল্ট চাই। আমাদের মগজে–মননে দাসত্ব ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশে তদবিরের সংস্কৃতি তৈরি করে গেছেন। এখনো আমার কাছে তদবির আসে। এটি দু-এক দিনে শেষ হবে না, সময় লাগবে। আমরা দেখাব যে তদবির ছাড়াও কাজ হয়।’

সারজিস আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৬ বছরে উন্নয়ন দেখিয়েছে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলের মতো কিছু অবকাঠামো দিয়ে। একটা দেশের উন্নতি কেবল কিছু অবকাঠামো দিয়ে হতে পারে না। এই অবকাঠামোগুলো মানুষের চোখের সামনে দিয়ে ভেতরে-ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। কেউ যখন কোনো অবকাঠামোকে অছিলা করে লুটপাটের সাম্রাজ্য চালায়, তখন তা বৃহৎ অর্থে দেশের জন্য সমস্যা। যে প্রকল্প ২০ হাজার কোটি টাকায় হয়ে যেত, সেই প্রকল্প চুরি বাটপারি সিন্ডিকেট লুটপাট স্বজনপ্রীতি করে যখন ৩৫ হাজার কোটি টাকায় ঠেকায় সেটি দেশের জন্য সমস্যা।’

এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু করার পর সেতুর রেলওয়ে প্রকল্পে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। যে সময়ে দেশে হাজারটা জিনিস ছিল তা তার আগে করা উচিত ছিল। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এক হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। চীন এই প্রকল্পে যখন সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসে, তখন ভারতের দিকে তাকিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যখন এই প্রকল্প আর সামনের দিকে আগায় না, তখন তা বাংলাদেশের জন্য সমস্যা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত