Ajker Patrika

বিএনপির সমাবেশ: ধর্মঘটে বন্ধ সব যান চলাচল, দুর্ভোগে নাকাল রাজশাহীবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮: ২০
বিএনপির সমাবেশ: ধর্মঘটে বন্ধ সব যান চলাচল, দুর্ভোগে নাকাল রাজশাহীবাসী

বিএনপির সমাবেশের আগে রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জরুরি প্রয়োজনে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। গণপরিবহন ধর্মঘটের কারণে গত দুদিন শুধু দূরের গন্তব্যের যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহালেও আজ শুক্রবার দুপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও থ্রি হুইলার ধর্মঘট শুরু হওয়ায় কাছের যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আগামীকাল শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। গত বুধবার থেকে চলছে বাস ধর্মঘট। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও থ্রি-হুইলার ধর্মঘটও।

শুক্রবার সকালে ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকায় ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি কর্মকর্তা সোহেল চৌধুরী। তিনি ঢাকা যেতে চান। কিন্তু দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারগুলো সব বন্ধ। স্ট্যান্ডে কোনো বাসও নেই। 

আজকের পত্রিকার এ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হলে সোহেল চৌধুরি জানান, পরিবহন ধর্মঘটের ভেতর তিনি ট্রাকের সামনে বসে রাজশাহী এসেছেন। ঢাকা যাবেন কীভাবে তা জানেন না।

সোহেল চৌধুরি আরও জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করে। রাজশাহীর বেসরকারি আমানা হাসপাতালের একটি যন্ত্রের সমস্যার কারণে জরুরি ভিত্তিতে ডাকা হয়। রাতেই তিনি ট্রাকে চড়ে আসেন। কাজ শেষ করে এবার তিনি ফেরার উপায় পাচ্ছেন না।

পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে দেখা যায়, এখানে ৭-৮ জন যাত্রী একত্রিত হয়ে গাড়ি ভাড়া করে উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। তারা রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাবেন।

আমিনুল হক নামের এক ব্যক্তি আজকের পত্রিকাকে জানান, সাধারণ বাস বন্ধ থাকলেও তিনি ভেবেছিলেন বিআরটিসি চলবে। তাই বিআরটিসি কাউন্টারে যান। কিন্তু বিআরটিসি বাসও বন্ধ। বাধ্য হয়ে কয়েকজনের সঙ্গে মাইক্রোবাস ভাড়া করছেন তিনি। জনভোগান্তি করতে বিআরটিসি বাস কেন বন্ধ রয়েছে সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মঘটের সময় গাড়ির তো কোনো নিরাপত্তা নেই। আমাদের গাড়িও যদি রাস্তায় এখন ভাঙচুর করে, তাহলে দায় নেবে কে? সরকারি সম্পদ তো নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। সে জন্যই গাড়ি আপাতত বন্ধ রয়েছে।’

দুপুরে বাগমারার ভবানীগঞ্জের সালাম শেখ তাঁর বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নগরীর রেলগেট এলাকায়। সালাম এ প্রতিনিধিকে জানান, চিকিৎসার জন্য তারা শহরে এসেছিলেন। রেলগেট সিএনজি স্টেশনে এসে দেখেন গাড়ি নেই। দু–একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থাকলেও ধর্মঘটের কারণ দেখিয়ে তারা যেতে চাচ্ছে না। এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা খুঁজে ভেঙে ভেঙে তাদের বাড়ি যেতে হবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতির সহসভাপতি আহসান হাবিব জানান, দুই দফা দাবিতে তারা ধর্মঘট শুরু করেছেন। দাবি দুটি হলো-সড়কে চলাচলের বাস মালিকদের বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং বিআরটিএর হয়রানি বন্ধ করা। আর বাস মালিকেরা মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করাসহ ১১টি দাবির কথা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত