Ajker Patrika

ভাতা বন্ধের খোঁজ নিতে গিয়ে জানলেন তিনি মারা গেছেন

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১১: ৪৭
Thumbnail image

নাটোরের লালপুরে ছখিনা বেগম (৮৪) নামে এক বিধবা নারীকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই বৃদ্ধার নামে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা একটি মৃত্যু সনদ সমাজসেবা অফিসে জমা দিয়ে ভাতা বাতিলের আবেদন করা হয়েছে। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, এটি ভুলবশত হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী ছখিনা বেগম লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একই গ্রামের দনি প্রামাণিকের মেয়ে এবং মৃত আ. সাত্তারের স্ত্রী।

আজ রোববার ভুক্তভোগী ছখিনা বেগমের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এই প্রতিনিধির। এ সময় তিনি জানান, হঠাৎ আগস্ট মাস থেকে তাঁর মোবাইল ফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাটি জানতে তিনি সমাজসেবা অফিসে খবর নিতে গেলে তাঁকে জানানো হয়, ‘আপনি তো মারা গেছেন’। তাই ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বৃদ্ধার নামে ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু স্বাক্ষরিত একটি মৃত্যু সনদ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার নূরুল্লাপুর গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দনি প্রামাণিকের মেয়ে ছখিনা বেগম ৮ জানুয়ারি ২০২২ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। সেই সনদ বয়স্ক ভাতা বন্ধের জন্য কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত ছখিনা বেগমের মৃত্যুসনদ। সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিধবা ওই বৃদ্ধা সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতার সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। তাঁকে মৃত দেখিয়ে তাঁর বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে অন্য একজনের নামে ভাতা করে দেওয়ার জন্য সমাজসেবা অফিসে আবেদন করা হয়। চেয়ারম্যানের দেওয়া মৃত্যু সনদের কারণে ওই বৃদ্ধার ভাতা সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর নাতি শিমুল হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ আগস্ট মাস থেকে নানির মোবাইল ফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গেলে তাঁরা ভাতা বন্ধের কারণ হিসেবে জানান–ঈশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মৃত উল্লেখ করে দরখাস্ত দিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখানে কর্মকর্তারা বলেছেন, চেয়ারম্যান নতুন করে আবার জীবিত দেখিয়ে দরখাস্ত দিলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু বলেন, ‘ভুলবশত এটা হয়ে গেছে। ওই নারীর ভাতা পুনর্বহালের জন্য আবেদন করা হয়েছে।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোত্তালেব সরকার বলেন, ‘সুবিধাভোগীর মৃত্যুতে তাঁর কার্ড বাতিল করা হয়। ঈশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান ছখিনা বেগমের মৃত্যুর সনদ জমা দেওয়ায় ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা বলেন, ‘এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভাতা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইসাহাক আলী জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত