Ajker Patrika

পাবনা চিনিকল বন্ধ থাকায় উৎপাদিত আখ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

প্রতিনিধি, পাবনা
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ৫০
Thumbnail image

অব্যাহত লোকসানের কারণে গত বছর দেশের ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ চিনিকলগুলোর মধ্যে পাবনা চিনিকল একটি। এদিকে চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার আখচাষিরা। চিনিকল বন্ধ থাকায় অধিকাংশ কৃষক আখের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও পাবনার অনেক কৃষক আশায় বুক বেঁধে আখের আবাদ করেছিলেন। কিন্তু এখন তাদের উৎপাদিত আখ মিলে সরবরাহ করা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিল বন্ধ থাকায় এ বছর পাবনা চিনিকল এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত আখ সরবরাহের দায়িত্ব তারা নেবে না। পাবনার নিকটবর্তী গোপালপুর চিনিকলে গত বছর কৃষকেরা আখ সরবরাহ করতে পারলেও এ বছর এখনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাননি চাষিরা। যে কারণে আখ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। 

এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফ উদ্দিন বলেন, পাবনা চিনিকলের অন্তর্গত দশটি চিনি উৎপাদনের জোন আছে। তবে উৎপাদন কম হওয়ায় এ বছর মিলের চারটি আখ উৎপাদন জোনকে পাবনার নিকটবর্তী গোপালপুর চিনিকলের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কৃষকদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। 

যে চারটি জোন নাটোরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে, সেগুলো হলো ঈশ্বরদী জোন, মুলাডুলি জোন, লক্ষ্মীকুণ্ডা জোন ও মিলগেট জোন। এসব জোনের আওতাধীন কৃষকেরা নির্ধারিত সময়ে আখ সরবরাহ করতে পারবেন বলে জানান সাইফ উদ্দিন। 

পাবনা সুগার মিলের আখচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিলু বলেন, গত বছর তিনি ২৫ বিঘা জমিতে আখের আবাদ করেন। মিল বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার পর উৎপাদিত আখ নিয়ে অনেক কষ্টে নাটোরের গোপালপুর চিনিকলে সরবরাহ করতে পেরেছিলেন। তবে এ বছর এখনো মিল কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না জানানোর কারণে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। 

আনসার আলী আরও বলেন, এক বিঘা জমিতে আখের আবাদ করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হলেও, মিল বন্ধ থাকায় মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে জমি লিজ দিতে হয়েছে। আখের ফলন ভালো হলেও সময়মতো আখ সরবরাহ করতে না পারলে তাঁকে পথে বসতে হবে। 

পাবনা চিনিকল জোনের ক্ষুদ্র চাষি আফসার আলী জানান, গত বছর তিন বিঘা জমিতে আখের আবাদ করলেও মিল থেকে এ বছর কৃষকদের জন্য সার, বীজ, কীটনাশক ও নগদ অর্থসহায়তা না দেওয়ায় ধারদেনা করে আখের আবাদ না করে সবজির আবাদ করেছেন তিনি। পাবনা সুগার মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন সাধারণ সবজিচাষি হয়ে গেছেন।

এদিকে গত মৌসুম থেকে পাবনা চিনিকলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে পাবনা সুগার মিলের শতাধিক কোটি টাকার সম্পদ। পরিচর্যার অভাবে মিলের পুরো এলাকা আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আগাছা জন্মেছে মিলের ইয়ার্ডে অযত্নে পড়ে থাকা প্রায় দুই শতাধিক ট্রলিতে। মিলের যন্ত্রপাতিতে মরিচা ধরে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। 

দ্রুত মিল চালু করা না গেলে মিলের অধিকাংশ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন মিলের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও কৃষকেরা। কৃষকদের স্বার্থে মিলের উৎপাদন পুনরায় চালু করার দাবি করেন তাঁরা।

পাবনা সুগার মিলের আখচাষি সমিতির সভাপতি শাজাহান আলী বাদশা বলেন, কৃষকদের স্বার্থে দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল আখের উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য বন্ধ মিল চালু করা দরকার। অচিরেই বন্ধ মিল চালু করা না হলে এসব মিলের সঙ্গে জড়িত কৃষকেরা দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল আখের উৎপাদন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। পাশাপাশি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় বন্ধ মিলের শত শত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে সরকার আরও লোকসানে পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত