Ajker Patrika

৫০ টাকার কলার টুকরায় শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা, প্রশাসন দেখে চম্পট কবিরাজ

নাটোর (লালপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

নাটোরের লালপুরে এবারও কলাচিকিৎসা বন্ধ করেছে প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির আশায় অমাবস্যার রাতে ও দিনে কলা খেয়ে আসছে হাঁপানি ও অন্য রোগীরা। প্রতিটি কলা চার টুকরা করে প্রতিজনকে এক টুকরা খাওয়ায় কথিত ওই কবিরাজেরা। আর প্রতি টুকরার দাম রাখা হয় ৫০ টাকা। এতে প্রতিটি জিনকলার দাম পড়ে ২০০ টাকা।

জানা গেছে, লালপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে কালীপূজার দিন অমাবস্যার সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত এই ‘কলাচিকিৎসা’ দিয়ে আসছে কয়েকজন কবিরাজ। প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে বৃহস্পতিবার রাতে এবার নিজ গ্রাম কলসনগর আবুল কালামের বাড়িতে গোপনে কথিত কবিরাজ মিজানুর রহমান এই চিকিৎসা দিচ্ছিল। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসা বন্ধ করেন ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে দেখা গেছে, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ থেকে মুক্তির আশায় মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান ও অটোরিকশা নিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন জেলার কয়েক শ মানুষ ভিড় করেছে উপজেলার কলসনগর গ্রামের আবুল কালাম বিশ্বাসের বাড়িতে।

জানা গেছে, গত বছর কথিত এই কবিরাজ মিজানুর রহমান প্রশাসনিক ঝামেলার শঙ্কায় পার্শ্ববর্তী শালেশ্বর গ্রামে তার দুলাভাই আব্দুল মতিনের বাড়িতে চিকিৎসা দিতে থাকলে প্রশাসন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনিক চাপে মিজানুর রহমানসহ কথিত এই কবিরাজেরা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিল।

এদিকে বৃহস্পতিবার নিজ গ্রামে তার সঙ্গী আবুল কালাম মুন্সির বাড়িতে গোপনে কলাচিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ভিডিও ও ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়।

চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পথে এক রোগীর কাছে জানতে চাইলে তিনি নাম না জানিয়ে বলেন, ‘একটা জিনকলার চার ভাগ করে এক ভাগের মধ্যে গাছ দিয়ে রোগীদের খাওয়ানো হয়। এ বছর এক টুকরা কলার দাম ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। গত বছরও ৫০ টাকা নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) সুরুজ্জামান শামীম বলেন, ‘কলার সঙ্গে গাছগাছড়া খেলে শ্বাসকষ্ট রোগ ভালো হয়, এমন তথ্যপ্রমাণ চিকিৎসা বিজ্ঞানসম্মত নয়। ভিত্তিহীন এ ধরনের চিকিৎসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে।’

ইউএনও মো. মেহেদী হাসান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে কথিত কলাচিকিৎসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই কথিত কবিরাজেরা পালিয়ে যায়। এরপরও গোপনে যদি আবারও কোনো রকম অপচেষ্টা করা হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত