Ajker Patrika

ছাত্রের সামনে প্রশংসাপত্র ছিঁড়লেন প্রধান শিক্ষক 

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
ছাত্রের সামনে প্রশংসাপত্র ছিঁড়লেন প্রধান শিক্ষক 

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় আশরাফুল ইসলাম নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা না পেয়ে ছাত্রের সামনেই প্রশংসাপত্র ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠছে। অভিযোগকারী ভুক্তভোগী ওই ছাত্রের নাম মাজিদুর রহমান। তিনি এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। 

আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

শুধু প্রশংসাপত্র ছিঁড়েই ক্ষান্ত হননি ওই প্রধান শিক্ষক, উত্তেজিত হয়ে ওই ছাত্রকে মারধর করতে তেড়ে আসলে সহকারী শিক্ষকেরা ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে। এ ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থী মাজিদুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করতে আসলে শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় (ইউএনও) কার্যালয় বন্ধ পাওয়া গেলে উপজেলা চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

শিক্ষার্থী মাজিদুর রহমান বলেন, ‘স্কুল থেকে প্রশংসাপত্র নিতে ৩০০ টাকা লাগে আমার জানা ছিল না। আমার কাছেও টাকা ছিল না। আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে একটি কম্পিউটার দোকান থেকে প্রশংসাপত্র নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম স্যারের কাছে স্বাক্ষর নিতে আসি। এ সময় প্রধান শিক্ষক প্রশংসাপত্রে স্বাক্ষর করে ৩০০ টাকা দিতে বলেন। আমার কাছে টাকা নাই বললে, তিনি আমার সামনেই প্রশংসাপত্র ছিঁড়ে টুকরা টুকরা করে ফেলেন। আমি স্যারকে পরে টাকা দিতে চাইলে তিনি (প্রধান শিক্ষক) তাৎক্ষণিক উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধরের জন্য তেড়ে আসেন। এ সময় স্কুলের আর শিক্ষকেরা আমাকে প্রধান শিক্ষকের মারধর থেকে রক্ষা করেন।’ 

জানতে চাইলে বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা স্কুলে মিটিং করছিলাম। এ সময় ওই ছাত্র হঠাৎ রুমে ঢুকে পড়ে। এ কারণে রাগের মাথায় ওই ছাত্রের প্রশংসাপত্র ছিঁড়ে ফেলছি।’ 

প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রশংসাপত্র নিতে কোনো টাকা পয়সা নেওয়া হয় না। তবে কোনো ছাত্রের আগের কোনো টাকা (ডিউ) বাকি থাকলে প্রশংসাপত্রের দেওয়ার সময় নেওয়া হয়। 

বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশংসাপত্র নিতে কোনো টাকা লাগবে না। ওই ছাত্র আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ওই ছাত্র লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরগুনার আমতলীতে যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় শাহিনুর বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ নীলগঞ্জ গ্রামের কালু হাওলাদারের স্ত্রী।

জানা গেছে, আট দিন আগে কালু হাওলাদার জমি ক্রয় করতে বায়না করেন। জমি কিনার জন্য স্ত্রী শাহিনুরের কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। কিন্তু শাহিনুর বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে শাহিনুরের কলহ বাধে। স্বামী কালু হাওলাদার, ননদ রেবেকা বেগম ও ননদের স্বামী হানিফ মুসল্লি তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁরা শাহিনুরের চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দেন। মারধর শেষে তাঁকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন। গৃহবধূর স্বজনেরা খবর পেয়ে আজ পুলিশে খবর দেন। পরে দুপুরে পুলিশ গিয়ে শাহিনুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।

গৃহবধূর বাবা হানিফ হাওলাদার বলেন, ‘জমি কিনতে আমার মেয়ের কাছে জামাতা তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে মেয়েকে মেরে ঘরে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

ভুক্তভোগী গৃহবধূ শাহিনুর বেগম বলেন, ‘২০১১ সালে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে যৌতুক দাবি করে আসছেন স্বামী। টাকা না দিলেই আমার ওপর নির্যাতন চালায়। গত এক সপ্তাহ আগে জমি কিনবে বলে আমার কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার চোখে মরিচের গুঁড়ো দিয়ে আমার স্বামী, নুনুন্দা (ননদের জামাই) হানিফ মুসুল্লি ও ননদ রেবেকা বেধড়ক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।’

এদিকে যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করে কালু হাওলাদার বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকটি চর-থাপ্পড় দিয়েছি।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আহত নারীর চোখে যে সমস্যা হয়েছে, ওষুধ খেলে ভালো হয়ে যাবে, তবে সময় লাগবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাল্যবিবাহের অতিথি ইউএনও, জানতে পেরে খাবার না খেয়ে চলে গেলেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নেছারাবাদে সপরিবারে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে জানতে পারেন কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে; এরপর খাবার না খেয়ে ফিরে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। পরে কাজিও বিয়ে না পড়িয়ে চলে যান।

ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দৈহারী গ্রামে।

জানা যায়, বর শেখ মো. অনিক (২৩) জগন্নাথকাঠি গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে এবং কনে মোসাম্মৎ মুন্নি আখতার (১৬) দৈহারী গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে। শুক্রবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে উভয় পরিবার। বিয়ে অনুষ্ঠানে পরিবারসহ ইউএনও অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

জানতে চাইলে বিয়ে পড়াতে আসা কাজি মো. ইসহাক আলী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে জানানো হয় মেয়ের বয়স ১৮ বছর। পরে কনের প্রকৃত বয়স ১৬ জেনে আমি বিয়ে পড়াইনি। ইউএনও সাহেবও বিষয়টি জানার পর সপরিবারে না খেয়েই চলে যান।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল আমীন জানান, ‘বিয়েবাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। ইউএনও সাহেব সপরিবারে এসেছিলেন। কনের বয়স কম শুনেই তিনি এবং কাজি চলে গেলে আমি নিজেও ফিরে এসেছি। আমরা কোনো খাওয়াদাওয়া করিনি।’

এ বিষয়ে ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত অনুরোধে দাওয়াতে গিয়েছিলাম। কনের বয়স কম জেনে আইনগত ও নৈতিক দিক বিবেচনায় দাওয়াত না খেয়েই ফিরে এসেছি। পরে জানতে পেরেছি বিয়েটি আর হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমলাপুর রেলস্টেশনে চাপাতি দেখিয়ে ভাইরাল যুবক গ্রেপ্তার

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রকাশ্যে চাপাতি বের করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া যুবক শাহ আলী শিকদারকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর দেখানো স্থান থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করেছে।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন, আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরের কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

এসপি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ১৯ অক্টোবর রাতে শাহ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলী জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। বিভিন্ন সময় তিনি জনমনে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন, যার কারণে জেলও খেটেছেন।

এসপি জানান, গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এসে শাহ আলী যে তথ্য দেন, তার ভিত্তিতেই কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর রাতে শাহ আলী শিকদার কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চাপাতি বের করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাইরাল হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, আসামি হলেন অটোরিকশাচালক

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি 
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।

শেরপুরের নকলায় খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দের ঘটনায় অটোরিকশাচালক রানা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য বিভাগের খাদ্য পরিদর্শক মো. আফতাব উদ্দিন বাদী হয়ে আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

গ্রেপ্তার অটোরিকশাচালক রানার বাড়ি নকলা পৌর শহরের জালালপুর মহল্লায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে নকলা পৌর শহর থেকে চালসহ রানার অটোরিকশাটি জব্দ করে।

পুলিশ, মামলার আসামি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাঁচকাহনীয়া গাদুর মোড় এলাকা থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল কেনেন জালালপুর মহল্লার মিলমালিক আশরাফ মিয়া ওরফে বুড়া আশরাফ। বিকেলে তিনি ওই চাল তাঁর মিলে নেওয়ার জন্য অটোরিকশাচালক রানাকে ভাড়া করেন। চাল স্থানান্তরের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযানে নামেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নকলা পৌর শহর থেকে অটোরিকশাসহ ওই ২২ বস্তা চাল জব্দ করে পুলিশ। আটক করা হয় অটোচালক রানা মিয়াকে। এ ব্যাপারে মিলমালিক আশরাফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নকলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কাশেম বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় নকলা থানায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত