Ajker Patrika

বাঘায় লাউ–বেগুনের পাইকারি দাম ১–৩ টাকা, তবুও ক্রেতা মিলছে না

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি 
Thumbnail image

রাজশাহীর বাঘায় গত এক সপ্তাহের তুলনায় দাম কমেছে লাউ ও বেগুনের। গত মঙ্গলবার আড়ানি হাটে লাউ ও বেগুনসহ অন্য সবজি কম দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে তুলনামূলকভাবে  কম দামে বিক্রি হয়েছে লাউ ও বেগুন।

স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী বিধান হালদার জানান, আড়ানি পৌর বাজারের সদর হাটে আজ মঙ্গলবার সকালে ১০৬ পিচ লাউ কিনেছেন ১১০ টাকায়। বাড়ি পৌঁছাতে ভ্যান ভাড়া লেগেছে আরও ২০ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ১ টাকা ২৩ পয়সা। এতগুলো লাউ একসঙ্গে কেনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দামে সস্তা হওয়ায় বাড়িতে নিজেদের তরকারি খাওয়াসহ গরুকে খাওয়ানোর জন্য কিনেছি। ৪২ কেজি ওজনের এক বস্তা বেগুন কিনেছেন ১৪০ টাকায়। প্রতিকেজি দাম পড়েছে ৩ টাকা ৩৪ পয়সা।

তিনি আরও জানান, এক সপ্তাহ আগে গত মঙ্গলবারের হাটে ২৮টি লাউ কিনেছিলেন ৬০ টাকায়। সেই হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা।

কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার হাটে নিয়ে প্রতি পিচ লাউ ৫ টাকা হিসাবে ২০০টি বিক্রি করেছি। জমিতে লাউ তোলা শ্রমিক ও পরিবহন ব্যয়সহ প্রতিটি লাউয়ে খরচ হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। খরচ বাদে প্রতিটি লাউ বিক্রি করে লাভ হয়েছে আড়াই টাকা।

হাবিবুর বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে লাউ আবাদ করেছি। মাচা তৈরির বাঁশ, সেচ, সার, শ্রমিকসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। বর্তমানে লাউয়ের দাম না থাকায় মাচা রেখে গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে।’

গোচর গ্রামের লাউ চাষি জহুরুল ইসলাম সোনা বলেন, বিক্রির উপযোগী প্রতিটি লাউয়ের পেছনে খরচ হয় কমপক্ষে ৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে পাইকারিতে প্রতিটি লাউ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫ টাকায়। তবে মাসখানেক আগে প্রতিটি লাউ ৪০–৪৫ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ক্রেতার অভাবে গাছের লাউ বেচতে পারছি না।

বর্তমান বাজার জানতে চাইলে এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, দুই সপ্তাহ আগে প্রকারভেদে প্রতিটি লাউ কিনেছিলেন ১৫ থেকে ২০ টাকা। ঢাকায় নিয়ে সেই লাউ বিক্রি করে বিভিন্ন খাতে খরচের হিসাবে লোকসান হয়েছে। তাই কয়েক হাট পরে আজ আড়ানি বাজার থেকে মাঝারি ও বড় সাইজের ৫০০ পিচ লাউ শহরে বিক্রির জন্য কেনেন। গড় হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ৫ টাকা। আবারও লোকসানের আশঙ্কা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আফরিন হোসেন জানান, আজ আড়ানি বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, প্রকারভেদে একটি লাউ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫–১০ টাকা।

পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন, প্রতিটি লাউ তাঁদের ৩–৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। বাজারে লাউয়ের দাম কম এবং ক্রেতারও সংকট। দাম পাওয়ায় দু–একজন চাষি গাছ কেটে ফেলেছেন বলে জানতে পেরেছেন। দু–একবার লোকসান হওয়ার পাইকাররাও আর লাউ কিনতে চাচ্ছেন না।

আফরিন হোসেন বলেন, তবে কৃষকেরা যাতে পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সেই সঙ্গে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কথা বলে কৃষকের পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউলল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। শীত কমে আসার কারণে লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত