Ajker Patrika

নাটোরে হাসপাতাল থেকে চুরি নবজাতক বিক্রি কুষ্টিয়ায়, পরে উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, ১৬: ৫৫
নাটোরে হাসপাতাল থেকে চুরি নবজাতক বিক্রি কুষ্টিয়ায়, পরে উদ্ধার

নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া মেয়ে নবজাতককে অবশেষে কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কাজলী বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্র আট হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি নবজাতককে কুষ্টিয়ার এক নারীর কাছে বিক্রি করেছিলেন বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন।

আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের করে এসব তথ্য জানিয়েছেন নাটোর জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান। মেয়ে নবজাতকটি জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের মহিষডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমান পলাশ ও হাসনা হেনা শিল্পী দম্পতির প্রথম সন্তান।

এর আগে ভোরে নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ থেকে নার্সের ছদ্মবেশে কাজলী বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুষ্টিয়ার খাজানগর গ্রামের কাজলী খাতুন নামে আরেক নারীর হেফাজত থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুর রহমান বলেন, ‘চুরির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর নাটোর সদর থানা-পুলিশের সাইবার টিমসহ পাঁচটি টিম অভিযান শুরু করে। প্রথমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ থেকে নার্সের ছদ্মবেশে কাজলী বেগমকে আটক করে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়ায় অবস্থানরত ক্রেতা কাজলী খাতুনের হেফাজত থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আট হাজার টাকায় নবজাতকটি বিক্রির চুক্তি হলেও ক্রেতা কাজলী খাতুন বিক্রেতা কাজলী বেগমকে নগদ ছয় হাজার টাকা ও বাকি দুই হাজার টাকা বিকাশে প্রদানের আশ্বাস দেন।’ 

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূ হাসনা হেনা শিল্পী গত বুধবার সন্তান প্রসবের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। নবজাতকটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত থাকায় কিছু সময়ের মধ্যেই তাকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে ভর্তি করা হয়। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলেও শিশুটি গাইনি ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেডে তার মায়ের সঙ্গেই ছিল। গতকাল শুক্রবার সকালে শিশুটির মা হাসনা হেনা শিল্পীর সঙ্গে তাঁর শাশুড়ি খায়রুন নাহারকে রেখে অন্যরা বাড়ি চলে যান। এই সুযোগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেড থেকে নার্সের পোশাক পরা এক নারী নবজাতকটিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে দাদির কাছ থেকে নিয়ে যান।’ 

কিছুক্ষণ পর নবজাতকের দাদি খায়রুন নাহার শিশু ওয়ার্ডে ছুটে গিয়ে ওই নারী ও তাঁর নাতনিকে আর খুঁজে পাননি। এ সময় তাঁর চিৎকারে হাসপাতালের লোকজন বিষয়টি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে যান। তাঁরা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে সেবিকার পোশাক পরা মধ্যবয়সী ওই নারী নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে সোজা হাসপাতালের মেইন গেট দিয়ে বের হয়ে একটি অটোরিকশায় চড়ে বাইরে চলে যান। 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এ টি এম মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত