Ajker Patrika

রাজশাহীতে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বন্ধ অটোরিকশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বন্ধ অটোরিকশা

রাজশাহী শহরে গণপরিবহন বলতে ছয় আসনের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আর দুই আসনের রিকশা। ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই আজ রোববার সকাল থেকে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন চালকেরা। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। অটোরিকশা বন্ধ থাকায় রিকশার চালকেরা আদায় করছেন ইচ্ছেমতো ভাড়া।

অটোরিকশা চালকেরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সঙ্গে অটোরিকশার প্রতিটি যন্ত্রাংশের দামও বেড়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। তাই ভাড়া বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন তাঁরা। সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা করার দাবি করেন তাঁরা।

আজ বেলা ১১টার দিকে কয়েকশ চালক শহরের রেলগেট এলাকায় জড়ো হন। পরে চালকেরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান নগর ভবনের সামনে। তখন তাঁরা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় অটোরিকশা চালকেরা অভিযোগ করেন, শহরে এখন লাল-সবুজ রঙের দুই রকম অটোরিকশা দিনের দুই বেলায় চলাচল করে। একবেলা অটোরিকশা চালিয়ে বড়জোর ৭০০ টাকার ভাড়া হয়। এর মধ্যে ৫০০ টাকাই দিয়ে দিতে হয় অটোরিকশার মালিককে। ২০০ টাকায় সংসার চলে না। তাই এ আন্দোলনে অটোরিকশা মালিকদেরও সমর্থন আছে। সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০ টাকা করা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান তাঁরা।

শাহাদত আলী নামে এক চালক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অটোরিকশার টায়ার-টিউব থেকে শুরু করে প্রতিটি যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে অটোরিকশার নিবন্ধন এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতেই প্রতি বছর খরচ হয় প্রায় চার হাজার টাকা। ভাড়া না বাড়ালে আমরা অটোরিকশা চালাতে পারব না।’ 

এদিকে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মোমিন দুপুরে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ শুনে তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তিনি জানান, আজ সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত। এ ব্যাপারে কথা বলতে আগামীকাল সোমবার চালকদের একটি প্রতিনিধি দলকে  মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তিনি চালকদের প্রতি আহবান জানান।

অটোরিকশা চালকেরা জানান, আগামীকাল তাঁরা মেয়রের সঙ্গে বসবেন। তবে অটোরিকশা বন্ধই থাকবে।

এরপর তাঁরা বিক্ষোভ শেষ করে চলে যান। শহরে এখনো অটোরিকশা চলাচল বন্ধ আছে।

সকালে নগরীর রেলগেট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কোনো অটোরিকশায় যাত্রী থাকলেই সেখানে নামিয়ে অটোরিকশাটি আটকে রাখছিলেন আন্দোলনকারীরা। ফলে সকাল থেকেই শহরে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। অটোরিকশা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।

অটোরিকশা না পেয়ে সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে না পেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শহরে অটোরিকশা না চলায় দুই আসনের রিকশা চালকেরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ইজিবাইক-অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘অটোরিকশা চালকদের দুটি সংগঠন আছে। তাঁরা কেউ এ কর্মসূচির বিষয়ে জানে না। তৃতীয় একটি পক্ষ নগরবাসীকে জিম্মি করে হঠাৎ এ আন্দোলন শুরু করেছে। অন্য কেউ ভিন্ন উদ্দেশ্যে এতে ইন্ধন দিতে পারে। তারপরও সোমবার দুপুরে তাদের নগর ভবনে ডাকা হয়েছে। মেয়রের সঙ্গে তাঁদের সভা হবে। তাঁদের কথা শুনে সবকিছু পর্যালোচনা করে সেখানেই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত