Ajker Patrika

সাবেক এমপি রত্নার গাড়িতে এখনো সংসদের লোগো

নাটোর প্রতিনিধি
সাবেক এমপি রত্নার গাড়িতে এখনো সংসদের লোগো

নাটোরের সাবেক সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ তাঁর ব্যবহৃত গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮৬৮৮৬) এখনো জাতীয় সংসদের লোগো ব্যবহার করছেন। সংসদের অনুমতি ছাড়া সংসদের লোগো ব্যবহার শাস্তিযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সাবেক এই এমপি তিন মাস ধরে এ অপরাধ করে যাচ্ছেন। নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রত্না আহমেদ একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সদস্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাটোর শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের হকার্স মার্কেট লাগোয়া বাড়িতে বসবাস করেন সাবেক এমপি রত্না আহমেদ। পাশে সড়ক বিভাগের জায়গায় একটি দোকানঘরে রত্না আহমেদের ব্যবহৃত ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি রাখা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ বছরে রত্না আহমেদ সড়ক বিভাগের ওই জায়গায় কাঠ দিয়ে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে সেটি দখলে নেন। সেখানে লেখা, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য (সাবেক) রত্না আহমেদ এমপি মহোদয়ের গাড়ি রাখার স্থান, পার্কিং নিষেধ’।

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়। পরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু হয়। সংরক্ষিত সংসদ সদস্য পদে পুনরায় মনোনয়ন না পাওয়ায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মানুযায়ী পদ হারান রত্না আহমেদ। কিন্তু তাঁর নামে সড়কের জমি দখলে রাখা সাইনবোর্ডটি তিনি সরিয়ে নেননি। এমনকি তিনি তাঁর ব্যবহৃত গাড়িতে এখনো জাতীয় সংসদের লোগো ব্যবহার করছেন।

সংসদ সদস্য না হয়েও সংসদের লোগো ব্যবহারের বিষয়টি জানতে গত ১৭ এপ্রিল রত্না আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। গাড়িতে এখনো সংসদের লোগো ব্যবহার করেন কি না, তা একাধিকবার জানতে চাওয়া হলে তিনি স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি। যিনি অভিযোগটি করেছেন, তাঁকে সংসদে গিয়ে এ ব্যাপারে সত্যতা জানতে প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন তিনি। ওই দিন তিনি নিজ গ্রামের বাড়ি নলডাঙ্গার ব্রহ্মপুরে অবস্থান করার কথা জানালেও আজকের পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি তাঁর বাড়িতে গিয়ে গাড়ি দেখতে পাননি।

রত্না আহমেদের এমন দাবির পর নজর রাখা হয় তাঁর ব্যবহৃত গাড়ির দিকে। বর্তমানে তিনি সংসদ সদস্য না থাকার কারণে দলের কোনো কর্মসূচিতে সেভাবে অংশ না নেওয়ায় তাঁর গাড়িটি অধিকাংশ সময় গ্যারেজে পড়ে থাকে। গত ২৮ এপ্রিল বেলা সোয়া ১টায় রত্না আহমেদের গাড়িটি দ্রুত গ্যারেজে ঢোকানোর সময় দেখা যায়, গাড়ির ড্যাশবোর্ডের ওপরে সংসদের লোগোসংবলিত স্ট্যান্ডবাই ক্রেস্ট।

৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় গাড়ির পেছনের কাচে জাতীয় সংসদের লোগো দেখা যায়। সর্বশেষ ৮ মে সকাল ৯টায় রত্না আহমেদের গাড়িটি গ্যারেজ থেকে বের করা হয়। এদিনও তাঁর গাড়ির পেছনে সংসদ ভবনের লোগো ও গাড়ির ড্যাশবোর্ডের ওপর সংসদের স্ট্যান্ডবাই ক্রেস্ট দেখা গেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের কর্মকর্তাদের গাড়িতে কয়েক ধরনের স্টিকার ও লোগো দেখা যায়। সাধারণত সংসদ সদস্যদের ব্যবহৃত গাড়ির সামনের কাচে সংসদের মনোগ্রামসংবলিত একটি ত্রিকোণ স্টিকারে সংসদ সদস্যদের আসন নম্বর ও সংশ্লিষ্ট গাড়িটির নম্বর লিপিবদ্ধ থাকে। এর দ্বারা গাড়িটি কোন সংসদ সদস্য ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়। অপর দিকে সংসদের অন্যান্য কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়িতে শুধু সংসদের লোগো থাকে। সে অনুযায়ী, রত্না আহমেদের গাড়িটি দেখে আপাতদৃষ্টে মনে হতে পারে, এটি সংসদের কোনো কর্মকর্তার গাড়ি।

গতকাল দুপুরে আবার সংসদের লোগো ব্যবহারের ব্যাপারে রত্না আহমেদের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সংসদে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত