Ajker Patrika

সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েও আ. লীগের পদে, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯: ৪৫
সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েও আ. লীগের পদে, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ

সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েও রয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদে। অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগে ঘাপলা, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা, ক্ষমতার অপপ্রয়োগসহ রয়েছে নানা অভিযোগ। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

মইনুল ইসলাম গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণ হয়। এর আগে ২০১৭ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সহসভাপতির পদ পান মইনুল ইসলাম। পরে তাঁর কলেজ সরকারিকরণ হলেও তিনি দলীয় পদ ছাড়েননি। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে তিনি এখনো আওয়ামী লীগের দলীয় পদে বহাল আছেন। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করায় তাঁকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে মইনুল ইসলামও লাপাত্তা। গত ১৩ আগস্ট কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, মইনুলকে অধ্যক্ষ নিয়োগেই ঘাপলা ছিল। কলেজের সহকারী অধ্যাপকদের বাদ দিয়ে প্রভাষক ও দলীয় নেতা মইনুল ইসলামকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করেছিলেন তৎকালীন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। পরে তাঁকেই অধ্যক্ষ করা হয়। এরপর থেকে ক্ষমতার দাপট দেখাতেন অধ্যক্ষ মইনুল।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কলেজটি সরকারিকরণ হয়। আর শিক্ষক-কর্মচারীদের এই কলেজেই আত্তীকরণের প্রজ্ঞাপন হয় চলতি বছরের ৬ মার্চ। এই প্রজ্ঞাপনে তিনি যোগ্যতা অনুযায়ী পঞ্চম গ্রেড প্রাপ্য হলেও প্রভাব খাটিয়ে নিজের বেতন করে নেন চতুর্থ গ্রেডে। তিনি প্রতি মাসে ১২ হাজার ৫০৬ টাকা করে বাড়তি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বকেয়া হিসেবেই তিনি বাড়তি নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া চলতি বছরে আরও বাড়তি নিয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

কলেজের শিক্ষকেরা জানান, প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারিকরণের কথা বলে অধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করেন। সে সময় তিনি সব শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা তুলে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগ।

সরকারি চাকরিজীবীদের কোনো দলীয় পদে থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু এই বিধি অমান্য করে অধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদে এখনো আছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চর আষাড়িয়াদহ ও বাসুদেবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের পক্ষে দায়িত্ব পালন করেন।

অভিযোগে বলা হয়, অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মইনুল ইসলাম। সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি লাপাত্তা।

তবে প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক বলেন, সরকার পতনের পর শুধু গত ১৮ আগস্ট ১৫ মিনিটের জন্য অফিসে এসেছিলেন অধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম। এরপর হাজিরা খাতায় কয়েক দিন ছুটি দেখিয়েছেন। এ ছাড়া অনুপস্থিত থাকা অন্য দিনগুলোতেও স্বাক্ষর দেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে ২০ আগস্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা তাঁর অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা ইউএনওর কাছে গিয়ে অভিযোগ জানান।

এরপর ইউএনও আবুল হায়াত হাজিরা খাতা যাচাই করেন। অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করায় তিনি সেই দিনগুলো অধ্যক্ষকে অনুপস্থিত লিখে দিয়েছেন। এ ছাড়া অধ্যক্ষ লাপাত্তা থাকায় তিনি শিক্ষকদের সভা করে জ্যেষ্ঠ কোনো শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেন। সে অনুযায়ী শিক্ষকেরা সভা করে সহকারী অধ্যাপক আসমা রেহেনাকে অধ্যক্ষের চলতি দায়িত্ব দেন।

সরকারি চাকরি করেও দলীয় পদে থাকাসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ মইনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ীর ইউএনও আবুল হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অধ্যক্ষ মইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর অর্থ আত্মসাৎসহ নিয়োগে অনিয়মের ব্যাপারে বলা যাবে। জাতীয়করণের নামে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন কিনা সেটিও তদন্ত হবে। যদি জাতীয়করণের পরও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের পদে থাকেন, তাহলে সেটি বিধিসম্মত নয়। এর প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের আট নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত রবি সন্ধ্যা থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত পৃথক অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ফেনীর দাগনভূঞা থানার আলিপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একরাম হোসেন (২৫), দাগনভূঞা উপজেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আদনান পিপুল (২৫), তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য মো. আসিবুল হক অর্ণব (২৫), দাগনভূঞার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব রহিম পলক (২৫), ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সাকের আলম (২৪), চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সদস্য মো. জহুরুল ইসলাম (৪৩), যাত্রাবাড়ী ৬৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোকাররম হোসেন (৪৮) এবং ওয়ারী থানা ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসমিন রহমান (৪৮)।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় ডিবি উত্তরা বিভাগের একটি দল মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিং এলাকা থেকে একরাম, আদনান, অর্ণব, সজিব ও সাকেরকে গ্রেপ্তার করে। একই দিন বিকেলে ডিবি রমনা বিভাগ গাবতলী এলাকা থেকে জহুরুল ইসলামকে এবং রাতে ডিবি মতিঝিল বিভাগ যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মোকাররম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। বিকেলে টিকাটুলির কে এম দাস লেন এলাকা থেকে ইয়াসমিন রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন যে তাঁরা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিলসহ সংঘটিত কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।

ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজশাহীতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করি, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করি—এই প্রতিপাদ্যে রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জেলা শাখা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে লিফলেট বিতরণ ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সচেতনতার মাধ্যমেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচতে বাড়ি ও অফিসের চারপাশে ফুলের টব, পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট, পলিথিন, ফুড কনটেইনারসহ যেখানে পানি জমে থাকতে পারে, সেসব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ছাড়া নির্মাণাধীন ভবন, লিফটের গর্ত, ওয়াটার মিটারের গর্ত ও অন্যান্য স্থাপনাতেও যেন পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি তিন দিন পরপর পরিবর্তন করতে হবে। কেউ ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস ও ভাতের মাড় বেশি করে খেতে হবে। জ্বরে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। এ ছাড়া ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে রক্ষা পেতে দিন ও রাতে বিশ্রামের সময় মশারি ব্যবহারেরও আহ্বান জানান বক্তারা।

সমাবেশে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার মোহাম্মদ ফয়সাল আলম, ড্যাবের রাজশাহী শাখার সভাপতি ওয়াসিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার তারিক সাবুসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমেক হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান, ১০ জনের কারাদণ্ড

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও র‍্যাব। অভিযানে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এবং জেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। অভিযানে হাসপাতাল এলাকার দোকান, ওষুধের কাউন্টার, টেস্ট সেন্টার ও গেটের পাশ ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়।

অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম, মো. নাছের (৩৬) ও মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন, সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। র‍্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও রোগী সুরক্ষার স্বার্থে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে নিয়মিত তদারকি করবে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত কেউ কেউ এ চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এই অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড কার্যকরের জন্য কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে দালালবিরোধী ব্যানার ও সচেতনতামূলক নোটিশ টানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেব না: ছাত্রশিবির সভাপতি

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা এখনো লক্ষ করছি, জুলাইকে ব্যবহার করে একটা শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গোছানো, নিজেদের পকেট ভারী করা, নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ার নেশায় মত্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই প্রজন্ম বিশ্বাস করি, আমরা বেঁচে থাকতে, আবু সাঈদের প্রজন্ম বেঁচে থাকতে কাউকে জুলাই নিয়ে ব্যবসা করতে দেব না।’

আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ‘আবু সাঈদের যে স্বপ্ন, আবু সাঈদের পিতার যে স্বপ্ন, প্রত্যেক শহীদ পরিবারের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন আমরাও আমাদের জীবন দিয়ে রক্ষা করব ইনশা আল্লাহ। এখনো যদি তুমি শহীদ পরিবারের কাছে যাও, তাদের কান্নাগুলো এখনো থামেনি। শহীদ পরিবারের মায়েরা এখনো কান্না করেন। এখনো তাঁদের সন্তানের জন্য তাঁরা আহাজারি করছেন।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আবার আবু সাঈদেরা জেগে উঠব। আমরা প্রত্যেকেই শহীদের প্রজন্ম হিসেবে আবার জেগে উঠব, দাঁড়িয়ে যাব। কিন্তু এই সমাজে কোনো ধরনের জুলুমতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে দেব না। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদকে আমরা এখানে কায়েম হতে দেব না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস রাজনীতি নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটা ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির জায়গা থেকে আমি ঘোষণা দিচ্ছি, কোনো হল দখলের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না। কোনো ধরনের ফাও খাওয়া, ক্যানটিনগুলোতে ফাও খেয়ে খেয়ে অন্যদের ওপর সেটা চাপিয়ে দেওয়া, বোঝা চাপিয়ে দেওয়া—এই রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না। কাউকে গোলামতন্ত্রের মধ্য দিয়ে নিজের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে—এ ধরনের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত