Ajker Patrika

পদ্মায় ভাঙন, ঘরদোর সরিয়ে নিচ্ছে ঝুঁকিতে থাকা মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ঝুঁকিতে থাকা বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে পদ্মাপারের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝুঁকিতে থাকা বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে পদ্মাপারের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীতে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে পদ্মার পাড়ে। অনেকে ঝুঁকিতে থাকা ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গাউনিয়া বাগপাড়া থেকে খলিফার চর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আরও ৫০০ থেকে ১ হাজার ঘরবাড়ি।

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা জানান, দেবীপুর, রুস্তম মোড়লপাড়া, খলিফার চর, মনোহরপুর, দোভাগী ঝাইলপাড়া, ফিল্ডবাজার, বাদশাপাড়া, বোনপাড়াসহ এসব এলাকার ঘরবাড়ি প্রতিদিন সরানো হচ্ছে। এ ছাড়া বোদ্দনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর বাতাসমোড় কমিউনিটি ক্লিনিক, বাতাসমোড় হাটবাজার, নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ফিল্ডবাজার, ফিল্ডবাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, ফিল্ডবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দোভাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর জগনাথপুর মহিলা গার্লস স্কুল, বাদশাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

নারায়ণপুর গাউনিয়া বাগপাড়া এলাকার বাসিন্দা স্বপন আলী বলেন, ‘২০ দিন ধরে পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে বহু ঘরবাড়ি পদ্মায় নেমে গেছে। আমার বাড়িও এক মাস পর স্থানান্তর করতে হবে। ইতিমধ্যে অন্য জায়গায় বাড়ি কিনে ফেলেছি। এক মাস পর সেখানে চলে যাব।’

স্বপন আলী আরও বলেন, ‘পদ্মার পাড়ের বাসিন্দাদের কান্না কোনো সরকার বুঝে না। হামরা চরম বিপদের মধ্যে জীবনযাপন করছি। শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, নাগরিক সেবাসহ সব দিক থেকে আমরা বঞ্চিত। প্রতিবছর আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙনের কারণে স্থানান্তর করতে হচ্ছে।’

নারায়ণপুর দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা টমাস আলী জানান, ‘ভাঙনে ঘরবাড়ি শেষ হচ্ছে। কিন্তু ভাঙন রোধে সরকার কিংবা রাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর কয়েক বছরের মধ্যে নারায়ণপুর ইউনিয়নটি পদ্মার গর্ভে চলে যাবে।’

দুর্লভপুর ইউনিয়নের দোভাগী ঝাইলপাড়া চর এলাকার বাসিন্দা বাইরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে পাঁচটি গ্রামের প্রায় ২০০ ঘরবাড়ি, বহু মসজিদ, প্রাইমারি স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাটবাজার হুমকির মুখে রয়েছে। ইতিমধ্যে বহু স্থাপনা ভেঙে গেছে। ঘরবাড়ি স্থানান্তর করা হচ্ছে।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি লিখিত আবেদন করলে তাঁদের ত্রাণ শাখা থেকে সহযোগিতা করা হবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, ‘সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর বাতাসমোড়, পাকার ঘাট, মনোহরপুর, ঝাইলপাড়া, মল্লিকপাড়া, পোলাডাঙ্গা বিওপি এসব এলাকার ডান তীর-বাঁ তীর মিলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এখন ভাঙনের মুখে। পদ্মায় এখন ২০ দশমিক শূন্য ৮ মিটার পানি রয়েছে। আর বিপৎসীমা ২২ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। ইতিমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে পোলাডাঙ্গা বিওপি ও মনোহরপুর এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার সুযোগ

মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত