Ajker Patrika

হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে লুটপাটের মামলা দিল আসামিপক্ষ 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৬: ০০
হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে লুটপাটের মামলা দিল আসামিপক্ষ 

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামে দুই বন্ধু হত্যা মামলার বাদী, সাক্ষী ও তাঁদের স্বজনদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূলত হত্যা মামলা থেকে আসামিদের বাঁচাতে মিথ্যা অভিযোগ এনে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বাদীপক্ষের অভিযোগ।

গত ২ নভেম্বর দুই বন্ধু হত্যা মামলার প্রধান আসামির ছোট বোন ও আরেক আসামি আবু তালেবের স্ত্রী মুর্শিদা খাতুন বাদী হয়ে হত্যা মামলার বাদীসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা হাসিবুল্লাহ বলেন, মামলার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলার অভিযোগপত্রে দেওয়া বাদী মুর্শিদা খাতুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু নম্বরটি বন্ধ পাওয়ায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দুই বন্ধু হত্যা মামলার বাদী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই ও তাঁর বন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, সেই সব আসামিকে রক্ষা করতে আমাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা। হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

মুর্শিদা খাতুন মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আসামিরা পরস্পর আত্মীয়, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী। আসামিদের বিরুদ্ধে অনেক ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। আমার ভাই ও স্বামীসহ অনেক লোকের বিরুদ্ধে জনৈক হাবিবুর রহমান খান মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। উক্ত মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামিরা আমার পরিবারের লোকজনকে হত্যা করবে বলে আস্ফালন করেন। তাঁদের ভয়ে আমাদের ঘরের সব পুরুষ পালিয়ে গেলে সেই সুযোগে গত ২৯ অক্টোবর আসামিরা লোহার রড, হাতুড়ি, শাবল, রামদা, বাঁশের লাঠি নিয়ে আমার বাড়িতে এসে গালিগালাজ করেন।’

এতে আরও বলা হয়, ‘এ সময় আসামিরা বলেন, আমাদের দলের লোকজনকে হত্যা করেছিস তোদেরও প্রাণে শেষ করে দেব। আমাদের ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এ সময় মামলার বাদী ও সাক্ষীরা প্রতিবাদ করলে ঘরের দরজা কুপিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করেন। তাঁরা ঘর-বাড়িতে হামলা করে নগদ টাকা লুট ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এতে মামলার বাদীর ৮৩ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

দুই বন্ধু হত্যা মামলা সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামের ফরহাদ হোসেনের ছেলে আল-আমিন খানের পরিবারের সঙ্গে একই গ্রামের হায়দার আলীর পরিবারের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে গত ১৯ অক্টোবর রাতে আলা-আমিন খান ও তাঁর বন্ধু আল-আমিন শেখের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলায় চালান হায়দার আলীর লোকজন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আল-আমিন খানের। গুরুতর আহত হন তাঁর বন্ধু আল-আমিন শেখ। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ অক্টোবর সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহত আল-আমিন খানের বড় ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে মেরাজুল ইসলাম, একই গ্রামের লোকমান খান, সবুজ বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তাঁরা জেলা কারাগারে আটক আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত