Ajker Patrika

ভালোবাসার টানে কম্বোডিয়া থেকে বাংলাদেশে আসা সামওনের মানবেতর জীবন

ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
Thumbnail image

কাজের সন্ধানে ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন নাটোরের লালপুরের মোহরকয়া (কয়লারডহর) গ্রামের আবুল কালাম আজাদ। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় কম্বোডিয়া থেকে আসা সাওমনের সঙ্গে। পরে দুজনের প্রেম ও প্রেম থেকে বিয়ে হয়। পরিবারে আসে তিন কন্যা সন্তান; আমেনা খাতুন (১৩), আয়েশা খাতুন (১২) ও আমিরা খাতুন (৯)। 

এ পর্যন্ত ভালোই ছিল। কিন্তু, সাওমনের ভাগ্যে এ সুখ খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বর্তমানে তিন কন্যা নিয়ে তাঁকে মানবেতন জীবন যাপন করতে হচ্ছে। 

ভাঙা ভাঙা বাংলায় সামওন জানালেন, ২০১৪ সালে স্ত্রী ও তিন কন্যাকে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরেন আবুল কালাম আজাদ। বুধিরামপুর শান্তিপাড়ায় চার কাঠা জমি কিনে শুরু করেন বাড়ি নির্মাণ। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত থাকার জন্য স্ত্রী সন্তানদের একটি ভাড়া বাসায় রেখে আবার মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান কালাম। 

স্মৃতি বেগম ও তাঁর তিন কন্যাকিন্তু বিধি বাম। ২০২০ সালে কালামের কিডনি রোগ ধরা পড়লে আবার দেশে ফিরে আসেন। জমানো অর্থ খরচ হয়ে গেলে তাঁর চিকিৎসার জন্য পরিবার ১০ কাঠা জমিও বিক্রি করে দেয়। শত চেষ্টার পরেও দেশে ফেরার এক মাসের মাথায় ২০২১ সালের ১৭ মার্চ ৩৭ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। 

কালামের মৃত্যুর পর অথই পাথারে পড়ে যান সামওন। আবুল কালামকে বিয়ের জন্য বৌদ্ধ ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় বাবা হাইসামওল এবং মা ছনমাইর সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না। অর্থের অভাবে বাড়ির কাজও শেষ করতে পারেননি। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিভিন্ন কাজেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। অর্থাভাবে দিন কাটছে চরম কষ্টে। 

এত কিছুর মাঝেও বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান 'সামওন' থেকে 'স্মৃতি বেগম' নাম নেওয়া এ সংগ্রামী নারী। ভাঙা ভাঙা বাংলায় এত কিছু বলার পরে জানালেন শেষ ইচ্ছে। তাঁর ইচ্ছে মুসলিম হিসেবে কবরটা যেন স্বামীর দেশে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত