Ajker Patrika

শেষ তিন দিনে ক্রেতার আশা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
শেষ তিন দিনে ক্রেতার আশা

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইল সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে কোরবানির পশুর হাট। তবে হাটগুলোতে এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর বেচাকেনা।

কৃষক ও খামারিরা হাটে গরু আনলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। এখন পর্যন্ত দরদামেই সীমাবদ্ধ বেশির ভাগ ক্রেতা।

ক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর দাম বেশি। অন্যদিকে খামারিরা বলছেন, হাটে ক্রেতা না থাকায় গরু বিক্রি হচ্ছে কম।

তবে ঈদের আগের দু-তিন দিনে বিক্রি বাড়বে বলে ধারণা করছেন ব্যাপারীরা।

অনেক ক্রেতা মনে করছেন, শেষের দিকে কিনলে দাম কমবে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৩৭টি। এ ছাড়া কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে আরও ৫৯টি হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮১ হাজার কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার। চাহিদার চেয়ে ৬ হাজারের মতো বেশি পশু রয়েছে। মোট পশুর মধ্যে ৪৪ হাজার ৮২৭টি ষাঁড়, ৬ হাজার ৭টি বলদ, ৮ হাজার ২৪৭টি গাভি, ২৩৩টি মহিষ, ২৪ হাজার ১৮২টি ছাগল ও ৩ হাজার ৫৬৪টি ভেড়া রয়েছে।

সরেজমিনে জেলার সবচেয়ে বড় ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী গরুর হাটে দেখা গেছে, জমজমাট হাটে দেশি-বিদেশি গরু উঠেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা তেমন নেই। আবার কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় খামারিরা গরু বিক্রি করছেন না।

বিক্রেতারা জানান, গতবারের তুলনায় এ বছর গরুর দাম বেড়েছে। ভুসি, খড়, খৈলসহ পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে খামারিদের। ফলে দাম বেড়েছে গরু-ছাগলের।
হাটে আসা ‍সখীপুর উপজেলার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোবিন্দাসী হাটে কোরবানির পশুর দাম জেলার অন্য হাটের তুলনায় একটু কম থাকে। তাই এই হাটে গরুর দাম যাচাই করতে এসেছি। আমাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের জন্য বেশ কয়েকটি গরু কিনতে হবে। তবে গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি। গত বছর যে ষাঁড়ের দাম ছিল ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

সেই ষাঁড়ের দাম এ বছর দেড় লাখের ওপরে। ভাবছি, আগামী হাটে এসে গরু কিনে নিয়ে যাব।’

টাঙ্গাইল সদর থেকে আসা মো. সুলতান বলেন, হাটে কোরবানির গরু আর গরু কিন্তু দাম বেশি। তাই বিক্রেতারা হাটে গরু আনছেন ঠিকই। কিন্তু তেমন কেউ কিনছেন না।
হাটে আসা ঢাকার ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, হাটে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা গরু কিনছেন না। কারণ, এই গরু আবার ভাড়া দিয়ে নিতে হবে ঢাকায়। এতে খরচ আরও বাড়বে।

কিন্তু ঢাকার ক্রেতার অধিক দামে এই গরু কিনতে চাইবে না।

ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা থেকে গরু বিক্রি করতে এসেছেন মো. আরজু বলেন, ‘১৯টি গরু নিয়ে এসেছি, এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি গরু বিক্রি করেছি। লাভ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার টাকা। বাকিগুলোর এখনো দামই বলছেন না কেউ। এমন হলে তো গরু বিক্রি না করে ফিরে যেতে হবে।’

নলিন এলাকার খামারি রাশেদুল আলম বলেন, ‘১২টি গরু এনেছি। সকাল থেকে বসে আছি, কেউ গরুর দামই বলছেন না।’

গোবিন্দাসী হাটের ইজারাদার জাহিদুল ইসলাম খোকা জানান, এই হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারেরা আসেন। স্বাভাবিক সময়ে হাটে ৬০০-৭০০ গরু এলেও গত রোববার ৫ হাজারের বেশি গরু হাটে উঠেছিল। কিন্তু সিলেটের সুনামগঞ্জের বন্যার কারণে তেমন বেচাকেনা হয়নি। দিন শেষে ৭০০ গরুর মতো বিক্রি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সামনে বিক্রি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত