Ajker Patrika

‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ উত্তাল ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৪: ১০
‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ উত্তাল ময়মনসিংহ

কোটা সংস্কারে সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে দাবি আদায়ের আন্দোলনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হন। 

এতে আনন্দমোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, নাসিরাবাদ কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না। অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁদের অভিভাবকেরাও আন্দোলনে অংশ নেন। একসময় শিক্ষার্থীরা মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের প্রথম গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। 

আন্দোলনের সমন্বয়নকারী আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী মানিক সাহা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সব বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছেন। সেই সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরাও আসছেন আন্দোলনে। দেশে ৯০ শতাংশ মানুষ কোটার বিপক্ষে। আমরা চাই মেধায় এগিয়ে যেতে, কোটায় নয়; আমাদের যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’ 

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আফিফা জান্নাত বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আমাদের আন্দোলন দমানো যাবে না। ঢাকা থেকে বাধ্য হয়ে চলে আসতে হয়েছে, তাই ময়মনসিংহের আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। আমার মতো সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে দাবি আদায় করেই ছাড়বে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের একজন কর্মী মারা গেছেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল তাঁর নাম নিয়েছেন; কিন্তু রাজপথে থেকে আমার কতগুলো ভাই মারা গেল, তাঁদের নাম একবারও নিলেন না, তাহলে আন্দোলন কীভাবে থামবে আপনি আশা করেন। এ দেশের ছাত্র সমাজ জেগেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে তাদের দমানো যাবে না।’ 

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নাসিরাবাদ কলেজের শিক্ষার্থী সুনীল দাশ বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলনকারীদের সরকার থামাতে না পেরে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিসে; এতে করে কী আন্দোলনে লোকজন কম হচ্ছে বলেন? অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় যোগ দিচ্ছে। স্বাধীনতার এত বছরেও কেন কোটা প্রয়োজন? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে কীভাবে?’ 

 ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ অর্থাৎ, সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিতে বিভিন্ন মোড়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুরো শহর থমথমে। মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। 

নগরীতে অটোরিকশাচালক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের কারণে শহরে একপ্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তাই ভাড়াও অনেক কমে গেছে। চলাটাই অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত