Ajker Patrika

জামালপুর আদালতের জিআরওর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণসহ হয়রানির অভিযোগ

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ১২
Thumbnail image

জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ইসলামপুর জিআর আমলি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষগ্রহণসহ নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা না দিলে মামলার নথি আদালতে উপস্থাপন না করাসহ মামলাসংক্রান্ত কোনো তথ্য বিচারপ্রার্থীদের দিতে চান না জিআরও আব্দুর রাজ্জাক। চাহিদা অনুযায়ী ঘুষের টাকা দিতে রাজি না হলে বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তবে জিআরও আব্দুর রাজ্জাকের দাবি, তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি থানার তদন্তে থাকা মামলার নথি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন আদালত-সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের জিআরও। আব্দুর রাজ্জাক পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে জামালপুর জেলা পুলিশের অধীনে চাকরিরত। এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ইসলামপুর আমলি আদালতে জিআরও পদে রয়েছেন।

জানা গেছে, ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে ইউসুফ আলীর একটি মোটরসাইকেল গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় চুরি করার সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে রাতে ইউসুফ আলী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ইসলামপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় মোটরসাইকেলটি জব্দ দেখায় পুলিশ। গত বুধবার দুপুরে ওই মামলায় মোটরসাইকেল ফেরত পেতে ইসলামপুর জিআরও আমলি আদালতে আবেদন করেন ইউসুফ আলী।

ভুক্তভোগী ইউসুফ আলী বলেন, ‘মোটরসাইকেল ফেরত পেতে আদালতে দাখিল করা আবেদনের বিষয়ে আমার কাছে ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন জিআরও আব্দুর রাজ্জাক। টাকা না দিলে কাজ হবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।’

ইসলামপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছামিউল হক বলেন, ‘ইউসুফ আলীর সঙ্গে আমিও আদালতে গিয়েছিলাম। মোটরসাইকেল ফেরত চেয়ে আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করতে আমাদের কাছে দাবি করা ঘুষের ৫ হাজার টাকা না দেওয়ায় দুর্ব্যবহার করেন আব্দুর রাজ্জাক।’

উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘নন জিআর একটি মামলার নথি আদালতে উপস্থাপনের জন্য জিআরও আব্দুর রাজ্জাক ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে বাধ্য হয়ে তাঁকে ১ হাজার টাকা দিয়েছি।’

একই ইউনিয়নের নাপিতেরচর শাহপাড়া গ্রামের শহিজল মিয়া বলেন, ‘গত ১১ মার্চ আদালতে মামলার নথি উপস্থাপন করতে গেলে জিআরও রাজ্জাক আমার কাছে ১ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কাজ হবে না বলে হুমকি দেন তিনি। পরে তাঁকে ৫০০ টাকা দিয়েছি।’

উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া গ্রামের সুলতান মিয়া বলেন, ‘আমার কাছ থেকে জিআরও রাজ্জাক দেড় হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। টাকা ছাড়া তিনি মামলার কোনো তথ্য দিতে চান না। তাঁর আচরণ ভালো নয়। কথায় কথায় হুমকি দেন।’

জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকাইসলামপুর সদর ইউপির সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জিআরও আব্দুর রাজ্জাক টাকা ছাড়া কাজ করেন না। তিনি আমার কাছ থেকে একাধিকবার ঘুষ নিয়েছেন।’

তবে জিআরও আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। আমি সুনামের সঙ্গে এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এই জেলায় আর বেশি দিন চাকরি করতে পারব না। ইতিমধ্যে অন্য জেলায় পোস্টিং নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছি। তবে কোনো ভুল যদি করেও থাকি, বিষয়টি গণমাধ্যমে না লিখে ক্ষমাসুন্দর সৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর আদালতের পরিদর্শক এ বি এম মাঈদুল হাছান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। অভিযোগ পেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত