Ajker Patrika

জামালপুরের কারাবন্দী ৪ মাদ্রাসা শিক্ষকের রিমান্ড শুনানি কাল

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
জামালপুরের কারাবন্দী ৪ মাদ্রাসা শিক্ষকের রিমান্ড শুনানি কাল

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দারুত তাক্বওয়া মহিলা আবাসিক মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ সেই ৩ ছাত্রীকে পুলিশ উদ্ধার করলেও নিখোঁজের ঘটনায় মানবপাচার মামলায় কারাগারে থাকা মাদ্রাসার ৪ শিক্ষকের সহজে মুক্তি মিলছে না। আগামীকাল সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই মাদ্রাসার ৪ শিক্ষকের রিমান্ড শুনানি হবে। 

কারাবন্দী শিক্ষকেরা হলেন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী শিক্ষক ইলিয়াস আহম্মেদ, মোছা. রাবেয়া বেগম এবং মোছা. সুকরিয়া। 

গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ঢাকার মুগদা এলাকা থেকে ওই ৩ ছাত্রীকে উদ্ধার করে ইসলামপুর থানা-পুলিশ। উদ্ধারকৃত ছাত্রীরা হলো উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর সরদারপাড়া গ্রামের মাফেজ শেখের মেয়ে মীম আক্তার (৯), সভুকুড়া মোল্লাপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে মনিরা (১১), এবং সভুকুড়া গ্রামের সুরুজ্জামানের মেয়ে সূর্যবানু (১০)। তারা সবাই দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

গত মঙ্গলবার ভোর রাতে ছাত্রী নিখোঁজের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদ্রাসার ওই ৪ শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পুলিশি হেফাজতে থাকা শিক্ষকদের র‍্যাবের একটি দল থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। 

পরের দিন বুধবার রাতে ইসলামপুর থানায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মামলা দায়ের করেন নিখোঁজ শিক্ষার্থী মনিরার বাবা মনোয়ার হোসেন। ওই দিন পুলিশি হেফাজতে থাকা শিক্ষকদের মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিনই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইসলামপুর থানার এসআই মাহমুদুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠান এবং আগামীকাল সোমবার রিমান্ড শুনানির আদেশ দেন। 

মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম সেতুর পূর্বপাড়ে বাংলা বাজার সভুকুড়া এলাকার দারুত তাক্বওয়া মহিলা মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ৩ ছাত্রী গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে মাদ্রাসার আবাসিক কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। ১২ সেপ্টেম্বর ভোররাতে শিক্ষকেরা ফজরের নামাজ পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। নামাজের পর তাঁরা মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়। 

নিখোঁজ ছাত্রীদের উদ্ধারে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মো. আসাদুজ্জামান ইসলামপুর থানায় একটি জিডি করেন। ওই দিন রাতে নিখোঁজের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালে নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটনার দিন রাতে মাদ্রাসাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। 

ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হওয়া ৩ ছাত্রীকে রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে ইসলামপুর থানা-পুলিশ একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। ওই ৩ ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে ইসলামপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নামে। পরে তারা একটি রিকশা ভাড়া করে। কিন্তু কোথায় যাবে তারা বলতে পারছিল না। পরে ওই রিকশাচালক তাদের মুগদায় নিজ বাসায় নিয়ে রাখেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (ইসলামপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই রিকশাচালকের বাড়ি থেকে ৩ ছাত্রীকে উদ্ধার করে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইসলামপুর থানার এসআই মাহমুদুল হাসান বলেন, 'মানব পাচারের মামলায় কারাগারে বন্দী থাকা ৪ শিক্ষকের আগামীকাল সোমবার রিমান্ড শুনানি রয়েছে। ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছি। রিমান্ড শুনানিকালে আমি আদালতে উপস্থিত থাকবো।' 
 
জামালপুরের এসপি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি। তিন ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনার পর মাদ্রাসাটির বিষয়ে নানা তথ্য আসছে। ফলে মাদ্রাসাটির অর্থের জোগানদাতা, সেখানে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হতো কি-না, এসব বিষয়ের তদন্ত চলছে।'

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মচারীদের পদ-পদবি-বেতন কাঠামো নিয়ে পাল্টা অবস্থানে দুই পক্ষ

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

নাম প্রস্তাবে আটকে আছে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’

মোহাম্মদপুরে আলোকচিত্রী ও জিগাতলায় শিক্ষার্থী খুন

ফেসবুকে লাইক-কমেন্ট, পাঁচ কর্মকর্তাকে নোটিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত