Ajker Patrika

গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ 

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ১৯
গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ 

জমির হালে গরুর বদলে কাজ করছে ঘোড়া। মই টেনে দিচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমিতে। এতে তুলনামূলক কম দামে হাল পাচ্ছেন কৃষকেরা। অন্যদিকে শখের ঘোড়াকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন এর মালিকও। 

আজ শনিবার ভোরের আলো ফুটতেই নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে এক কৃষি জমিতে দেখা মেলে এ দৃশ্যের। 

মাঘের শুরুতেই বোরো আবাদের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকেরা। ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কঠোর পরিশ্রম করছেন তাঁরা। জমি চাষের পর মই দেওয়ার কাজের জন্য ডাক পড়ছে ‘বাহাদুর’ নামের এ ঘোড়ার। কম খরচে জমিতে মই দিতে তার এত কদর। 

এ ঘোড়ার মালিক হলেন রইছ উদ্দিন। তিনি একই ইউনিয়নের চেংজানা গ্রামের বাসিন্দা। আদর করে পোষা এই প্রাণীটির নাম রেখেছেন বাহাদুর। 

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে চলছে ফসলি জমি প্রস্তুত করার কাজ। আগাম জমি প্রস্তুত করে কে কার আগে ধানের চারা রোপণ করবেন-এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে কৃষকদের মধ্যে। যান্ত্রিকতার কারণে এখন গরু দিয়ে হালচাষের প্রবণতা কমেছে। তাই পাওয়ার টিলার ও বড় ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করা হচ্ছে বেশি। এ অবস্থায় জমি চাষের পর মই দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে বাহাদুরের কারণে অনেকটাই স্বস্তিতে কৃষকেরা। 

জাহাঙ্গীর আলম নামের স্থানীয় এক কৃষক জানান, হালচাষের পর রইছ উদ্দিনের  ঘোড়া দিয়েই এলাকার অনেকে জমিতে মই দেন। এতে খরচও কম লাগে। 

এ বিষয়ে ঘোড়ার মালিক রইছ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, এক বছর আগে গাইবান্ধা জেলা থেকে শখ করে ঘোড়াটি এনেছেন তিনি। পাশাপাশি ওকে দিয়ে কোনো না কোনো কাজ করানোর জন্য। আদর করে নাম দেন ‘বাহাদুর। এখন সেই শখের ঘোড়াটি দিয়ে খেতে নিয়মিতই মই দেওয়ার কাজ করেন। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে মই দেওয়ার কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে। এ ছাড়াও বাহাদুরকে দিয়ে কাছাকাছি জায়গায় অল্পস্বল্প মালামালও টানাটানি করেন। 

তিনি আরও জানান, বাহাদুরকে দিয়ে দৈনিক প্রায় হাজার টাকার রোজগার হয় রইছ উদ্দিনের। এ দিয়ে ভালোভাবেই চলে সংসার। গত বছর উপজেলা সদরের প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলায় বাহাদুর পুরস্কারও জিতেছিল বলে জানান তিনি।

সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জুয়েল মিয়া জানান, রইছ উদ্দিন একজন পরিশ্রমী মানুষ। এলাকার চাষিদের কাছে তাঁর ঘোড়ার বেশ চাহিদা রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান, কালের বিবর্তনে গরু-মহিষ দিয়ে হালচাষ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই কৃষকেরা এখন পাওয়ার টিলার ও বড় ট্রাক্টর দিয়েই জমি হালচাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন বেশি। বলতে গেলে, যান্ত্রিক উপায়ে হালচাষ এখন প্রায় শতভাগে পৌঁছে গেছে। তবে এরপরও বাড়তি আয়ের জন্য কেউ কেউ শখের ঘোড়া দিয়ে মই দেন। এতে মন্দের কিছু নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত