Ajker Patrika

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ০৮
লাশের পাশে পাওয়া চিরকুট। ছবি: সংগৃহীত
লাশের পাশে পাওয়া চিরকুট। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ওয়ারীর জমজম টাওয়ারের পঞ্চম তলার বাসা থেকে দম্পতি মোহাম্মদ মুঈদ ও তাঁর স্ত্রী আইরিন আক্তার রত্নার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে বিছানা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাশ থেকে একটি চিরকুট পায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আজ রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মুঈদের মরদেহ ছিল অর্ধগলিত, পাশেই তাঁর স্ত্রী রত্নার নিথর দেহ ছিল। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, মুঈদ চার-পাঁচ দিন আগে মারা গেছেন এবং আইরিন দু-এক দিন আগে।

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ জানান, দম্পতি একসঙ্গে থাকতেন, কারও সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল না। মুঈদ ছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত। অসুস্থতার কারণে তিনি দীর্ঘদিন কর্মহীন ছিলেন। আগে খেলনার ব্যবসা করতেন, পরে আর চলতে পারেননি। রত্না ছোটখাটো কাজ করতেন। অভাব-অনটন ছিল। বাড়িভাড়াও কয়েক মাস ধরে পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এমনকি কাজের বুয়ার বেতন পর্যন্ত বাকি ছিল।

ঈদের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বেতন দেবেন। সেই প্রতীক্ষায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজের বুয়া বাসায় আসেন। অনেকক্ষণ কলবেল বাজিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে ফিরে যান। গতকাল শনিবার বিকেলে আবার এসে বাড়িওয়ালার সহায়তায় বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন। সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে।

পাশেই পাওয়া যায় একটি চিরকুট। সেখানে লেখা, ‘বিয়ের পর আমার বাবা-মা, স্বামীর পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ নাই। আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকাতে কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমার এবং আমার স্বামীর বাড়িতে নেওয়ার দরকার নাই।’

মুঈদের বড় ভাই মুগলী সানি জানান, ২০১০ সালে মুঈদ ও রত্না প্রেম করে বিয়ে করেন। পরিবার মেনে নেয়নি। সেই থেকে সম্পর্ক ছিন্ন। যোগাযোগ বন্ধ। মুঈদের ক্যানসার ছিল। ভাইয়ের মৃত্যুর পর হয়তো শোকে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে, হয়তো স্ট্রোক করেছে, হয়তো বিষ খেয়েছে—তবে কিছুই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত