Ajker Patrika

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ২৭
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম ইউনিট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম ইউনিট। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলের পার্কিংয়ে জাকির ও মিজানুরকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। তাঁরা জানান, জাকিরকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কথা বলে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছিল এক দালাল। কিন্তু তাঁকে শ্রীলঙ্কায় নিয়ে অবৈধ পথে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। পরিবার আরও টাকাপয়সা দিয়ে তাঁকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়। জাকির সেই টাকা আর তুলতে পারেননি। গত রোববার (১০ আগস্ট) টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরদিন গতকাল সোমবার তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা এসব কথা বলেন। নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার লটপটিয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে জাকির হোসেন। আর দক্ষিণ গোমাতলী গ্রামের মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে মিজানুর। তাঁরা বন্ধু ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।

নিহত মিজানুরের ভাগিনা মো. রিয়াদ বলেন, ‘আমার মামা আগে গ্রামে বালুর ব্যবসা করতেন। সেই ব্যবসা বাদ দিয়ে আপাতত মাছের খামার করছিলেন। তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। জাকির আর মিজানুর দুই বন্ধু। জাকির প্রাইভেট কার চালাতেন, আর প্রায়ই মিজানুরকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন, তাঁকেও গাড়ি চালানো শেখাতেন। গত শনিবার রাতে তাঁরা দুজন, গাড়ির মালিক ও মালিকের স্ত্রীর বড় ভাই (সম্বন্ধী) গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। মালিকের সম্বন্ধীর ওই দিন রাতে বিদেশের ফ্লাইট ছিল। বিমানবন্দর থেকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে আসেন জাকির ও মিজান। একজন রোগী নিয়ে পরদিন গ্রামে ফেরার কথা ছিল। এরপর কী হয়েছে, আমরা জানি না। তবে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে, এটা বুঝতে পারছি।’

জাকিরের বাবা মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমার ছেলের কারও সঙ্গে কোনো ঝগড়াঝাঁটিতে নাই। কোনো রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত না। কারা তাকে মেরেছে, তা-ও জানি না। তবে দুই বছর আগে আমেরিকায় যাওয়ার জন্য এলাকার এক দালালকে টাকা দিয়েছিলাম। সেই দালাল তাদের নিয়ে এসেছিল ঢাকায় পল্টনে এক ট্রাভেল এজেন্সির ফজলু নামের এক ব্যক্তির কাছে। সব মিলিয়ে তখন প্রায় ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপর জাকিরকে শ্রীলঙ্কা নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে অবৈধ পথে আমেরিকায় পাঠানোর কথা ছিল, তবে পারেনি। এরপর আরও কিছু টাকা দিয়ে তাকে আমরাই দেশে ফেরত আনি।’

আবু তালেব আরও বলেন, ‘এর পর থেকে ফজলুর কাছে সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে সে কিছুদিন পর টাকা ফেরত দেবে বলে জানায়। এরপর বহুবার তার পেছনে ঘুরেও টাকা ফেরত পাচ্ছিলাম না। এই টাকা চাওয়ার কারণে তারা আমার ছেলেকে একবার মারধরও করেছিল। সবশেষ কিছুদিন আগে এলাকায় দালালের সঙ্গে কথা হয় এবং স্ট্যাম্পে সই করে যে চলতি মাসের ১০ তারিখে সেই টাকা ঢাকায় এজেন্সিতে এসে ফেরত দেবে। কিন্তু ওই ১০ তারিখেই জাকিরকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনা তারাই ঘটিয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তারা ছাড়া আর কেউ এটি করতে পারে না।’

প্রাইভেট কারের মালিক জোবায়েদ আল মাহমুদ সৌরভ জানান, নিহত দুজন ও তাঁদের বাড়ি একই উপজেলায়। ১১ বছর ধরে গাড়ির ব্যবসা করেন তিনি। তিন মাস ধরে তাঁর প্রাইভেট কার ভাড়ায় চালান জাকির হোসেন। গত শনিবার তাঁর সম্বন্ধীর ইতালির ফ্লাইট ছিল। এ কারণে তাঁরা চারজন গাড়িতে করে ঢাকায় আসেন। সম্বন্ধীকে বিমানবন্দরে নামিয়ে তিনজন মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে যান। সেখানে তাঁদের গ্রামের এক রোগী ভর্তি ছিলেন। তাঁকে গত রোববার বেলা ১১টায় ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল। গত শনিবার ভোরে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মালিক সৌরভ সিদ্ধান্ত নেন, বাসে করে যাবেন। আর জাকির ও মিজানুর সকালে রোগীসহ গ্রামে ফিরবেন। সেই কথামতো তিনি বাসে করে চলে আসেন। বাসের টিকিট কেটে দেন জাকির। রোববার বিকেলে জাকিরকে কল করেন। কিন্তু ওপার থেকে কেউ রিসিভ করছিল না। এরপর অনেকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পরদিন অর্থাৎ গতকালও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। গতকাল বিকেলে তিনি ঢাকায় আসার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু এর আগে বেলা ৩টার দিকে রমনা থানা-পুলিশ তাঁকে কল করে জানায়, হাসপাতালের পার্কিংয়ে তাঁর গাড়ির ভেতর থেকে দুজনের লাশ পাওয়া গেছে।

এর আগে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রমনা থানা-পুলিশ। প্রতিবেদনে উপপরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন উল্লেখ করেন, তাঁদের শরীরে বিভিন্ন জায়গা ফোলা ও ফোসকা পড়া। এ ছাড়া মুখ লালচে, ফোলা ও রক্তমাখা। প্রাথমিকভাবে তাঁদের মৃত্যুর কোনো কারণ উল্লেখ নেই প্রতিবেদনে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২ ধরনের পদে ২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ১৬ অক্টোবর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগের মাধ্যমে আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন।

পদের নাম: ডুপ্লিকেটিং মেশিন অপারেটর কাম-দপ্তরি।

পদ সংখ্যা: ১টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা। ফটোকপি মেশিন চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

পদের নাম: ইলেকট্রিশিয়ান।

পদ সংখ্যা: ১ টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে সনদপ্রাপ্ত হতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদনপত্রের খামের উপর পদের নাম উল্লেখ করে ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, মানিকগঞ্জ’ বরাবরে ডাকযোগে পৌঁছাতে হবে। সরাসরি ও নির্ধারিত তারিখের পরে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ‘এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকেরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।

কারখানার শ্রমিক মনিরা খাতুন বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার তারিখ ছিল ১০ অক্টোবর। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন দিই-দিচ্ছি করে দিন পার করছে। আজ বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করার কোনো সম্ভবনা নেই। পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।’

আরেক শ্রমিক আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবার আছে, স্ত্রী-সন্তান আছে। বাড়িভাড়া ও মুদিদোকানের বকেয়ার জন্য চরম চাপে আছি। পাওনাদারেরা রীতিমতো চাপ দিচ্ছে টাকা পরিশোধ করতে, নয়তো বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। পেটের দায়েই আমরা রাস্তায় এসেছি। লাঠিপেটা হলেও আমরা টাকা চাই।’

এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘এক মাসের বেতন বকেয়া। আজ পরিশোধের তারিখ ছিল; কিন্তু আজও সম্ভব হচ্ছে না। বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কাজ ফেলে মহাসড়কে চলে গেছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কয়েকটি তারিখ দিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পরিশোধের জন্য আজ সর্বশেষ তারিখ ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কিছুতেই সড়ক ছাড়ছেন না। এ সময় টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ ফুলপুর সড়কের গোয়াতলা শশার বাজার নামক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার গোয়াতলা এলাকার আমজত আলীর ছেলে শামসুল হক (৩০) ও আটপাড়া এলাকার হাসেন আলীর ছেলে শাহজাহান (৪৫)।

তারাকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহদী হাসান বলেন, গোয়াতলা শশার বাজার এলাকায় বাই রোড থেকে একটি মোটরসাইকেল ময়মনসিংহ ফুলপুর সড়কে উঠছিল। এ সময় ঢাকা থেকে হালুয়াটগামী ইমাম পরিবহনের একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।

মেহদী হাসান আরও বলেন, মরদেহ দুটি স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। বাস আটক করা সম্ভব হলেও চালক পালিয়ে গেছেন। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝটিকা মিছিলের ভিডিও, বাস্তবে তেমন কিছু না: ডিএমপি কমিশনার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডিএমপি-জাইকার আয়োজনে রোড সেফটি সেমিনার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিএমপি-জাইকার আয়োজনে রোড সেফটি সেমিনার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, তবে বেশির ভাগই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিত্তিক। বাস্তবে তেমন কিছু না। এতে আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেলে সোনারগাঁওয়ে ডিএমপি-জাইকার আয়োজনে রোড সেফটি সেমিনার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত ১৭ বছরে বড় ধরনের কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি। ফলে বর্তমান কর্মরত দুই লাখ সদস্যের প্রায় অর্ধেকই এই সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত, যাদের অনেকেই কখনো ভোট দেননি বা নির্বাচনের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে পুলিশের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। সামনে একটা নির্বাচন আসছে, পুলিশ তার দায়-দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমাদের অনেক সদস্যই জানেই না নির্বাচনে দায়িত্ব কীভাবে পালন করতে হয়। তাই আমরা সারা দেশে ট্রেনিং চালাচ্ছি। ডিএমপিতেও চলছে। আমি সব সময় অফিসারদের বলছি, ১০০ শতাংশ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।’

এবারের নির্বাচনকে ঘিরে একটি ‘নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য’ পরিবেশের আশা করা হচ্ছে। তবে যেহেতু দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটি এবার অংশ নিতে পারছে না, তাই তারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন কমিশনার।

তাঁর ভাষায়, ‘একটি দল নিষিদ্ধ ঘোষিত। তারা ককটেল বিস্ফোরণ, নাশকতার চেষ্টা করছে। তবে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি, যাতে কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড না ঘটে।’

নভেম্বরের শেষ দিকে ‘একটি চমৎকার নির্বাচনী পরিবেশ’ তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘এখন সবাই নির্বাচনের মুখোমুখি। জনগণ ভোট দিতে চায়। এমনকি যাদের বয়স ৩৫-৪০, তারাও জীবনে ভোট দেয়নি, এটা আমাদের দেশের জন্য দুঃখজনক।’

রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের মিছিল-সমাবেশ নিয়ে কমিশনার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, তবে বেশির ভাগই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক।

ডিএমপি কমিশনারের ভাষায়, ‘অনেকে নাইট কোচে এসে অল্প সময়ের জন্য ব্যানার দেখিয়ে ভিডিও করে ফেসবুকে দেয়। এতে মনে হয় বড় মিছিল হলো, কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি আমরা অস্বীকার করতে পারি না, তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই।’

নির্বাচন কমিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত