Ajker Patrika

সরিষাবাড়ীতে ট্রেনযাত্রা

৩ কারণে ভোগান্তি যাত্রীদের

  • ঢাকা থেকে তিনটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে এই উপজেলায়।
  • তিন ট্রেনের দুটি প্রায় প্রতিদিনই বিলম্বে চলে, একটি চলে মাঝরাতে।
  • বিলম্ব, সূচি সুবিধাজনক না হওয়া, ধীরগতির কারণে ভোগান্তি নিত্যসঙ্গী।
জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর
সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন
সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর মানুষের কাছে প্রিয় বাহন ট্রেন। যাত্রী চাহিদার কারণে ঢাকা থেকে এই উপজেলায় তিনটি আন্তনগর ট্রেন চলে। কিন্তু বিলম্ব, ট্রেনের সূচি সুবিধাজনক না হওয়া এবং ক্রসিংয়ের কারণে জায়গায় জায়গায় অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি ও ট্রেনের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ এখন যাত্রীদের নিত্যসঙ্গী। তাঁদের দাবি, ট্রেন তিনটির সূচি পরিবর্তন করে সুবিধাজনক করলে এবং বিলম্ব কমিয়ে আনতে পারলে দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যেত।

ঢাকা থেকে জামালপুরে পাঁচটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে সরিষাবাড়ীর ওপর দিয়ে চলে তিনটি ট্রেন। এগুলো হলো জামালপুর এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও যমুনা এক্সপ্রেস। এর মধ্যে জামালপুর এক্সপ্রেস চলে ঢাকা থেকে ভূঞাপুর পর্যন্ত। অগ্নিবীণা ও যমুনা এক্সপ্রেস চলে ঢাকা থেকে সরিষাবাড়ীর তারাকান্দি পর্যন্ত। ঢাকা থেকে জামালপুর চলাচলকারী অন্য দুই ট্রেন তিস্তা এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস যায় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়।

রেলের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, সরিষাবাড়ীতে চলাচলকারী তিন ট্রেনের মধ্যে জামালপুর এক্সপ্রেসের সাপ্তাহিক ছুটি রোববার। বাকি দুটি সপ্তাহে সাত দিনই চলে। জামালপুর এক্সপ্রেসের ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় সকাল ১০টায়, সরিষাবাড়ী পৌঁছানোর সময় বেলা ৩টা ২১ মিনিটে। অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে, সরিষাবাড়ী পৌঁছানোর সময় বিকেল ৪টা ৩৩ মিনিটে। আর যমুনা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে, সরিষাবাড়ী পৌঁছানোর সময় রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে।

ফিরতি পথে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের সরিষাবাড়ী থেকে ছাড়ার সময় বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে, ঢাকায় কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর সময় রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে। জামালপুর এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে, ঢাকায় পৌঁছানোর সময় রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে। যমুনা এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় রাত ২টা ১৮ মিনিটে, ঢাকায় পৌঁছানোর সময় সকাল ৮টায়।

তবে যাত্রী ও রেলসূত্র বলেছে, তিন ট্রেনের কোনোটিই নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে জামালপুর এক্সপ্রেস ও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের বিলম্বের অন্যতম কারণ ঢাকা থেকে ছেড়ে সরিষাবাড়ীতে দেরিতে পৌঁছানো। অনেক সময় নির্ধারিত সময়ের এক-দুই ঘণ্টাও বিলম্ব হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে ফিরতি যাত্রায়ও। ট্রেন দুটির ঢাকা পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক সময় মাঝরাতও পেরিয়ে যায়। এমন সময় ঢাকায় পৌঁছানোর পর নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন যাত্রীরা। অনেকে স্টেশনে বসেই রাত কাটাতে বাধ্য হন।

রেলে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী মজনু মিয়া, আব্দুর রহিম, কাজল ও রাশেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জামালপুর এক্সপ্রেস ও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন সন্ধ্যায় সরিষাবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। প্রতিদিনই ট্রেন দুটি নির্ধারিত সময়ের ১ থেকে ২ ঘণ্টা বিলম্বে সরিষাবাড়ীতে আসে। ফলে ফিরতি পথেও বিলম্বের খাঁড়ায় পড়তে হয়। যমুনা এক্সপ্রেস সরিষাবাড়ী ছাড়ে গভীর রাতে। সে সময়ও এই ট্রেনে সওয়ার হওয়া কঠিন। বিশেষ করে দূরদূরান্তের যাত্রীদের এই ট্রেন ধরতে হলে সন্ধ্যার পরপরই স্টেশনে কিংবা স্টেশনের আশপাশে আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনদের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিতে হয়। ফলে স্বচ্ছন্দের ট্রেনযাত্রা সরিষাবাড়ীর মানুষের কাছে ভোগান্তির যাত্রায় পরিণত হয়েছে।

যাত্রীদের দাবি, তিন ট্রেনেরই সূচি পরিবর্তন করলে যাত্রী ভোগান্তি কমত। বিশেষ করে জামালপুর এক্সপ্রেস ও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের সূচি এমনভাবে পরিবর্তন করা দরকার, যেন ঢাকা থেকে সকালে ছেড়ে দুপুরের মধ্যে সরিষাবাড়ী পৌঁছানো যায় এবং সরিষাবাড়ী থেকে বিকেলে ছেড়ে রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছানো যায়। অন্যদিকে যমুনা এক্সপ্রেসের সূচি পরিবর্তন করে সকালের দিকে করলে দুপুরের মধ্যে যাত্রীরা ঢাকায় পৌঁছাতে পারতেন।

সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই ট্রেন বিলম্বে যাতায়াত করে। মাঝরাতে ও বিকেলে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়লেও সকালে কোনো ট্রেন নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা প্রজাতন্ত্রের এমন চাকর যে মালিককে জেলে ভরে দিতে পারি’

জামায়াতের অফিসে আগুন নেভাতে গিয়ে কোরআন শরিফ দেখেননি, দাবি ফায়ার সার্ভিসের

দিনাজপুরে নিহত মাইক্রোবাস-আরোহীদের সবাই সরকারি কর্মকর্তা

ফরিদপুরে গাড়ির চাকায় ছিন্নভিন্ন অজ্ঞাত ব্যক্তি, অক্ষত শুধু পায়ের জুতা

ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া সেই মতিউর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত