Ajker Patrika

ফকিরহাটে পেঁয়াজের বাজার অস্থির

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১২: ৩৭
Thumbnail image

ভোজ্যতেল সয়াবিনের দাম নিয়ে ক্রেতাদের ভোগান্তির মধ্যেই হঠাৎ পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অস্থির হয়ে উঠেছে ফকিরহাটের পেঁয়াজের বাজার। দুই দিনের ব্যবধানে ৭৫ কেজির প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ৭৫০ টাকা, ৬০ কেজি রসুনের বস্তা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

এভাবে হঠাৎ পেঁয়াজ ও রসুনের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ক্রেতার পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন। ভবিষ্যতে দাম আরও বৃদ্ধির ভয়ে উদ্বিগ্ন ক্রেতাদের পেঁয়াজ কিনতে দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। 

আজ শুক্রবার সকালে ফকিরহাট বাজারের বিভিন্ন খুচরা পর্যায়ের কাঁচাবাজারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ (ছোট-বড় একসঙ্গে) ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে, যা এক দিন আগে ২৮ থেকে ৩০ টাকা ছিল। ৫৫ টাকার রসুন দুই দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এ ছাড়া ৬০ টাকার কাঁচা মরিচ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এভাবে হুটহাট দাম বাড়িয়ে অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের জিম্মি করছেন বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পেঁয়াজ কিনতে আসা একাধিক ক্রেতা। 

একই চিত্র দেখা যায় উপজেলার অন্যান্য বাজারেও। বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ সময় বেশির ভাগ দোকানে দ্রব্যের দৈনিক মূল্যতালিকা দেখা যায়নি। 

ফকিরহাট বাজারের পূর্ব মাথার খুচরা পর্যায়ের পেঁয়াজবিক্রেতা ফেরদৌস শেখ, জামাল হোসেনসহ কয়েকজন দোকানদার জানান, কোনো কারণ ছাড়াই প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১২ থেকে ১৭ টাকা, রসুন ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, আলু ৫ থেকে ৭ টাকা এবং মরিচে ৬০ টাকার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বাজার করতে আসা বেসরকারি কলেজের শিক্ষক শেখ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সয়াবিন তেলে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তাঁর মধ্যে পেঁয়াজ, রসুনের বাজার চড়া হতে শুরু করেছে। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। দিনদিন প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে হতাশায় পড়ে গেছি।’ 

পেশায় ভ্যানচালক মো. জুলু শেখ বলেন, ‘যা আয় করি তা যদি তেল-পেঁয়াজ কিনতেই চলে যায়, তাহলে ভাত খাব কী করে? উচ্চমূল্যের কারণে পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ 

ক্রেতাদের ভোগান্তির সঙ্গে নিজেরাও বিপাকে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেন আসলাম খান নামের খুচরা বিক্রেতা। কী ধরনের বিপাক জানতে চাইলে এই পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা আসলে কম দামে বিক্রি করতে চাই, কিন্তু বেশি টাকা দিয়ে কিনে সেটা তো সম্ভব নয়।’ 

ফকিরহাট বাজারের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজ-রসুনের আড়তদার ‘সততা বাণিজ্য ভান্ডার’-এর পাইকারি বিক্রেতা ছাদেক মল্লিক জানান, পেঁয়াজের দাম কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। হঠাৎ খুলনার বড় বাজারের পাইকারেরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরাও নাকি বেশি দামে কিনেছেন। এভাবে দাম বাড়ার বিষয় অস্বাভাবিক ব্যাপার মনে হচ্ছে। 

এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। আমাদের আইনের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবে দামের তালিকা দোকানে টানিয়ে না রাখলে জরিমানা করা হচ্ছে। 

ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত