Ajker Patrika

মধু না পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন শতাধিক মৌয়ালি, দাদনের টাকায় দিশেহারা

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৩৯
মধু না পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন শতাধিক মৌয়ালি, দাদনের টাকায় দিশেহারা

পূর্ব সুন্দরবনে এবার মধুর সংকট দেখা দিয়েছে। বনে কাঙ্ক্ষিত মধু না পেয়ে গত দুদিনে শতাধিক মৌয়ালি বাড়ি ফিরে এসেছেন। কিন্তু মধু ছাড়া বাড়িতে এসে মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৌয়ালিরা।

শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালি গ্রামের মৌয়াল ছগির মোল্লা বলেন, ‘সুন্দরবনে এবার মৌমাছি নেই, মধুর চাক তেমন দেখা যায় না। গত ১০দিন বনের মধ্যে ঘুরে ১৫টি চাকে ১০ কেজি মধু পেয়েছি গ্রুপে ১১ জন মানুষ। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে মধু সংগ্রহে গিয়ে মধু না পেয়ে ফেরত এসেছি। এখন কীভাবে মহাজনের টাকা পরিশোধ করব সে চিন্তায় আছি।’ এ বছর তাঁরা ঈদ করতে পারবেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেন মৌয়ালি ছগির মোল্লা। 

একই ধরনের কথা জানিয়ে বন থেকে ফিরে আসা বগী দশঘর গ্রামের মৌয়ালি নান্না ফরাজী। তিনি বলেন, ‘আমার দলে ১২ জন লোক। ১১ দিন বনে ঘুরে ত্রিশ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পেরেছি।’

এ ছাড়া সুন্দরবনে কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার কথা জানান তেরাবাকা গ্রামের মৌয়াল মোতালেব হাওলাদার, মাহাবুব তালুকদার, বগী গ্রামের মোফাজ্জেল খান ও নান্না মিয়াসহ আরও অনেকে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর মধু আহরণের জন্য সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ থেকে ৪১টি পাস (অনুমতিপত্র) ইস্যু করা হয়। পাঁচ শতাধিক মৌয়াল দুই সপ্তাহের পাস নিয়ে গত ১ এপ্রিল সুন্দরবনে যাত্রা করে। বনে গিয়ে মৌয়ালরা তেমন মধুর চাক পাচ্ছেন না। ২-১টি চাক পেলেও তাতে মধু খুবই কম পেয়েছেন। কাঙ্ক্ষিত মধু না পেয়ে মৌয়ালরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। গত দুই দিনে শরণখোলার শতাধিক মৌয়ালি তাঁদের পাস শরণখোলা স্টেশন অফিসে সমর্পণ করে বাড়ি চলে গেছেন।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর সুন্দরবনে মৌমাছি আগের মতো বাসা বাঁধেনি, তাই মধু পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অনেকে পেয়েছে কিন্তু পরিমাণে কম। বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০টি পাস মৌয়ালিরা স্টেশন অফিসে ফেরত দিয়ে গেছেন বলে এই স্টেশন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত