Ajker Patrika

আমদানি বাণিজ্যে বেনাপোল কাস্টমসের ৮ শর্ত জারী

প্রতিনিধি
আমদানি বাণিজ্যে বেনাপোল কাস্টমসের ৮ শর্ত জারী

শার্শা (যশোর): দেশের সর্ব বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্য ও পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে আটটি শর্ত জারি করেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউস। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত শর্ত জারির অনুলিপি অবগতির জন্য বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আটটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। এ শর্ত জারির ফলে কাস্টমস কর্মকর্তারা অনিয়ম কমে আসবে এবং কাজে স্বচ্ছতা ফিরবে মনে করছেন।

অপরদিকে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, এতে বাণিজ্যে যেমন ধীর গতি নেমে আসবে, তেমনি অতিরিক্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের কারণে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যে আগ্রহ হারাবেন।

শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে

  • একটি সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট প্যাকিং তালিকা দিতে হবে এবং কোন দেশ থেকে পণ্যটি এসেছে সেটি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • একাধিক পণ্য এক সাথে আমদানি করা যাবে না।

  • প্রতি বিনিময়ে ৫০০ এর বেশি প্যাকেজ আমদানি করা যাবে না।

  • একটি পণ্য চালানে টু হুইলার, থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার পার্টস মিশ্রিত অবস্থায় আমদানি করা যাবে না। পৃথকভাবে সবগুলো আমদানি করতে হবে।

  •  কাপড় কিংবা অন্য কোন পণ্যে একই নাম না দিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে নামকরণ করে দিতে হবে। যেমন: শার্ট, প্যান্ট, কটন, সিনথেটিক, ওড়না, সিনিল ভেলভেট ফেব্রিকস ইত্যাদি নাম ঘোষণা দিয়ে পণ্য চালান আমদানি করতে হবে।

  •  একটি পণ্য চালানে ২৫টির বেশি পণ্য আমদানি করা যাবে না।

  • সীমান্তের অ্যান্টি পয়েন্টে পণ্য চালান গ্রহণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মালিক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিকে প্রদত্ত অনাপত্তিপত্র দাখিল করতে হবে।

  • অননুমোদিত প্রতিনিধি, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বা কর্মচারীদেরকে কাস্টমস হাউসে প্রবেশ এবং আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাস কাজে নিয়োজিত করা যাবে না।


বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, কাস্টমস কর্তৃক নির্দেশিত শর্তের কয়েকটি যৌক্তিক কারণ আছে। তবে এর অধিকাংশ নিয়ম মেনে আমদানি করতে গেলে এতে বাণিজ্যে যেমন ধীরগতী নামবে তেমনি অতিরিক্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ হারাবেন অনেক ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বৈধ নিয়ম মানতে সব ব্যবসায়ীরা বাধ্য। তবে এখানে কয়েকটি শর্ত রয়েছে যা মেনে পণ্য আমদানি করতে গেলে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এতে ছোট-খাট ব্যবসায়ীরা এই অতিরিক্ত খরচ বহন করে আমদানি করতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার শামিমুর রহমান জানান, আট শর্ত মেনে পণ্য আমদানি হলে সরকারের যেমন রাজস্ব আয়ে স্বচ্ছতা বাড়বে তেমনি অনিয়ম অনেকাংশে কমে আসবে। খুব দ্রুত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, দেশে চলমান ১২টি স্থলবন্দরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল বন্দরের কাস্টমস হাউস। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। চট্টগ্রাম বন্দরের পর বেনাপোল বন্দরের অবস্থান। প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্যে ব্যবসায়ীদের নানান বৈধ সুবিধা থাকলেও বেনাপোল বন্দরের বিভিন্ন কঠোর নিয়ম জারির কারণে এপথ দিয়ে ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বঙ্গবন্ধু ও মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বহাল থাকছে

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত