Ajker Patrika

হাসপাতাল থেকে রোগীকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ২০: ৩২
হাসপাতাল থেকে রোগীকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও সদর থানা একত্রে তদারকি করছে। হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের হাসপাতালে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে। তবে এরই মধ্যে এসব উদ্যোগকে ফাঁকি দিয়েই চলছে অনিয়ম। 

মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদিক) ডা. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধি। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ঘটনাস্থলে আসেন। পরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আর কখনো হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে না যাবেন না এই শর্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়। 

ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে চুয়াডাঙ্গার শ্যাকড়াতলা মোড় থেকে নিজের অসুস্থ মেয়ে শামসুন্নাহারকে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট নিয়ে ডা. হুমায়ুন কবিরের কক্ষে যান। পরে ডা. হুমায়ুন কবির রোগী শামসুন্নাহারের রোগ নির্ণয়ের জন্য তাঁর প্রেসক্রিপশনে তিনটি পরীক্ষা লিখেন ও পরীক্ষাগুলো করানোর জন্য রোগীকে গ্রিন লাইফ মেডিকেল সেন্টারে যেতে বলেন। ডা. হুমায়ুন কবিরের কক্ষের সিরিয়াল সহায়তাকারী ও গ্রিন লাইফ মেডিকেল সেন্টারের প্রতিনিধি এক কিশোর হাসপাতাল থেকে তাঁদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছিল। হাসপাতালের প্রধান ফটক দিয়ে রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন গ্রিন লাইফ মেডিকেল সেন্টারের প্রতিনিধিসহ ওই দুজনকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

ভুক্তভোগী শামসুন্নাহারের মা আদরী খাতুন বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে আসি, কিন্তু হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষয়ে আমরা কিছু বুঝি না। ডাক্তার আমাদের যা বলেছে আমরা তাই করেছি।’ 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, ‘আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তিনি একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক, তিনি রোগীদের এত পরীক্ষা লিখতে পারেন না। যদি চিকিৎসার প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেন তবে সে পরীক্ষা হাসপাতালেই সম্ভব। হাসপাতাল থেকে দালালের মাধ্যমে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পাঠানো অপরাধ। যদি তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী বলেন, ‘একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক আয়ুর্বেদিক বিষয়ে লেখাপড়া করেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করেন। একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে আলট্রাসনোগ্রাম বা ইসিজির বিষয়ে পড়ানো হয় না। সুতরাং এ জাতীয় পরীক্ষা লেখাও একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের বৈধ নয়।’ 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘হাসপাতালে দালালদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দালালদের সঙ্গে যদি কোনো চিকিৎসকের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

তবে ডা. হুমায়ুন কবির এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত