Ajker Patrika

ভারতীয় ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ৩ জনের নামে মামলা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
মামলায় অভিযুক্ত দুজন। ছবি: সংগৃহীত
মামলায় অভিযুক্ত দুজন। ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটে জালিয়াতির মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বাগেরহাট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. সাইদুর রহমান বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার কার্যালয়ে মামলাটি করেন। এতে পারস্পরিক যোগসাজশ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিধিবহির্ভূতভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে।

আসামিরা হলেন সদর উপজেলার তৎকালীন নির্বাচন কর্মকর্তা এবং বর্তমানে বরিশালের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার হাওলাদার, চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন ও চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্ণি গ্রামের বাসিন্দা মো. মোশাররফ হোসেন মোল্লা। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নিজামকে।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করা সত্ত্বেও ফণীভূষণ ওরফে মনি মণ্ডল ও প্রতুল চন্দ্র মণ্ডলের নামের দুই ভাইকে চিতলমারী থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ এবং তা ব্যবহার করে একজনকে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই দুজন ভারতীয় নাগরিক হলেও আড়ুয়াবর্ণি গ্রামে থাকা তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির জন্য স্থানীয় মোশাররফ তাঁদের দেশে নিয়ে আসেন এবং ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদে জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন করান।

দুদক সূত্র বলছে, ওই আবেদনে নির্ধারিত ফরমে ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি ফণীভূষণ এবং ১৯৫৩ সালের ৪ এপ্রিল প্রতুলের জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়। আবেদনের চার দিন পর তাঁদের জন্মনিবন্ধন দেন চেয়ারম্যান নিজাম। এরপর ওই জন্মনিবন্ধন দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে ফণীভূষণের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা হয়।

অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে, ফণীভূষণের জন্ম ১৯৪৮ সালে, কিন্তু তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয় ২০১৭ সালে। যা তাঁর জন্মের ৬৯ বছর পর। ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, চিকিৎসার জন্য এলাকার বাইরে থাকা। এ ছাড়া জন্মনিবন্ধনে বাবার নাম মৃত শশধর মণ্ডল দেওয়া হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া হয়েছে মৃত রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। বাবার মৃত্যু লেখা ১৯৪৪ সালে। সে অনুযায়ী, বাবার মৃত্যুর চার বছর পরে ফণীভূষণের জন্ম। সেই সঙ্গে সুষেন মণ্ডল নামের এক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার এবং তাঁর স্বাক্ষর জাল করে শনাক্তকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর বর্তমান ঠিকানা দেওয়া হয়েছে বাগেরহাট পৌরসভার সোনাতলা গ্রাম। তবে তদন্তকালে দুদক ওই এলাকায় সেই ব্যক্তির কোনো অস্তিত্ব পায়নি। এমন আরও অনেক জালিয়াতি এবং ওই পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ফণীভূষণকে দাতা দেখিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করা হয়েছে।

দুদকের এডি সাইদুর বলেন, উক্ত ব্যক্তিকে বিধিবহির্ভূতভাবে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে, যা দুদকের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস: এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুলের বিরুদ্ধে এবার মামলা

রক্ত কেনা যায় না—ইয়েমেনে নিমিশাকে ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি মাহদির পরিবারের

২৫ সেকেন্ডে ১২ গুলি, হাসপাতালে গ্যাংস্টারের শরীর ঝাঁঝরা

গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনায় ফেসবুকে সরব ইসলামপুরের পলাতক আওয়ামী নেতারা

গোপালগঞ্জে চলছে কারফিউ, পরিবেশ থমথমে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত