Ajker Patrika

যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার অপরাধীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে লাপাত্তা

  • জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত নিম্ন আদালতে জামিনে মুক্ত ৪,৮০৮ জন।
  • বেশির ভাগ মাদক, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি মামলার আসামি।
  • জামিনের পর ২১০০ জন লাপাত্তা, আদালতে আর হাজির হচ্ছেন না।
  • পুলিশ বলছে, মুক্তি পেয়ে অপরাধীরা আবার একই অপরাধে জড়াচ্ছে।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১০: ২২
মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার এক ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার এক ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেলিম ওরফে চুয়া সেলিম। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের এই বাসিন্দার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র ও মাদকের ৩৫টি মামলা রয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি রাতে যৌথ বাহিনী একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে গ্রেপ্তারের চার মাসের মাথায় জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি লাপাত্তা।

জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেলিমের প্রতিপক্ষ সোহেল ভূঁইয়া নভেম্বরে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর জামিন পেয়ে আর আদালতে হাজির হননি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ১২টি মামলা। এ দুজনের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর গত জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত জামিনে মুক্তি পাওয়া ২ হাজার ১০০ আসামি আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন না। ঢাকার নিম্ন আদালত ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রসিকিউশন বিভাগের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জামিন পাওয়ার বিষয়টি আসামিদের আইনগত অধিকার ও আদালতের বিষয়। কিন্তু পুলিশকে এ জন্য একই কাজ একাধিকবার করতে হয়। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ। এতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণও বাধাগ্রস্ত হয়।

সূত্রগুলো বলছে, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, মাদক ও হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন মোট ৪ হাজার ৮০৮ জন। তাঁদের মধ্যে ছিনতাই মামলায় ৭৫৬, মাদক মামলায় ১ হাজার ৫৬৪, চুরির মামলায় ২ হাজার ১৬, ডাকাতি মামলায় ৪৬৮ এবং হত্যা মামলায় চার আসামি রয়েছেন। এদের বেশির ভাগই যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জামিনে মুক্তি পাওয়া আসামিদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন না। তাঁদের অনেকে আবার ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি ও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছেন।

পুলিশের সূত্র জানায়, সেলিম ওরফে চুয়া সেলিমের অনুসারীরা জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় নাম থাকলেও সেলিম ক্যাম্পে থাকেন না। ওই ক্যাম্পে মাদক কারবারের প্রতিদ্বন্দ্বী সোহেল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধেও হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র ও মাদকের ১২টি মামলা রয়েছে। ক্যাম্পে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেলিম ও সোহেলের অনুসারীদের মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলি হয়। গত সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে দুই মাদক কারবারি নিহত হন। নভেম্বরে সোহেল এবং জানুয়ারিতে সেলিমকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে দুজনই জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছেন।

জেনেভা ক্যাম্পের কেউ সেলিম ও সোহেলের বিষয়ে মুখ খুলতে চান না ভয়ে। জানতে চাইলে শরীফ নামের এক ব্যক্তি বলেন, সেলিমের নাম শুনেছেন, তবে কখনো তাঁকে ক্যাম্পে দেখেননি।

গেন্ডারিয়া থানার দুটি ডাকাতি মামলায় গত মাসে নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান আসামি রাজন। পুলিশের নথি বলছে, এই যুবকের বাসা গেন্ডারিয়ার ডিস্টিলারি রোডে। তিনি এখন পলাতক। একই মামলার পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলার মামলায়ও জামিন পেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম রাজু। তাকে আগেও একবার গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

জানুয়ারিতে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার উত্তরা পশ্চিম থানার দুই মামলার আসামি রবিউল আওয়াল, খিলক্ষেত থানার দুটি ও মিরপুর মডেল থানার একটি মামলার আসামি রুবেল হোসেন, যাত্রাবাড়ী থানার দুটি ছিনতাই মামলার আসামি রুবেল এবং বংশাল থানার দুই মামলার আসামি পাক্কু রনি জামিন পেয়ে আর আদালতে হাজিরা দেননি। পাক্কু রনিকে যৌথ বাহিনী এর আগেও ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল।

ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিভাগ বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক পরিশ্রম করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাঁরা জামিন পেয়ে আবার একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। এতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জিং হচ্ছে।

ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের সূত্র বলছে, যেসব আসামি জামিন পেয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই মামলার তারিখ অনুযায়ী আদালতে আসছেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের আবার গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করতে হবে।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘আমরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, হত্যা মামলাসহ যেসব অপরাধী জনগণের জন্য হুমকি তাদের জামিনের বিরোধিতা করি। তারপরও কিছু অপরাধী জামিন পায়। তবে আমরা সব সময় চেষ্টা করি যাতে অপরাধীরা কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে না যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ রোববার ভোররাতে তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিভীষণ সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মান্নান বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাঁরা যশোর, নড়াইল, খুলনা ও মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্য ২ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ আছে।

তাঁরা হলো আব্দুল খালেক (৫৫), রিয়া পলি (১৩), নাসিমা খাতুন (৩৮), ফরিদা বেগম (৪০), ফতেজা আক্তার (৩৬), আলমাস আহমেদ (৩৬), অহিদ সরকার (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৭) সালমা বেগম (৪০), রুনা (৩৬), ছুফিয়া বেগম (৪০), জরিনা বেগম (৩০), রাকিব (৯), পারভিন (৪৮) ও বিথি খাতুন (৯)।

আবদুল মান্নান আরও বলেন, ভোরে সীমান্তে টহলের সময় আন্তর্জাতিক পিলার ২১৯ / ৭১ আরএস হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লালমাটিয়া নামক স্থানে ওই ১৫ জনকে দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। এ সময় তাদের আটক করে ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি। তাঁদের গোমস্তাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুশ ইনের শিকার ১৫ বাংলাদেশি নাগরিককে রহনপুর ডাকবাংলোতে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাখা আছে। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁদের অভিভাবকদের ডেকে এনে সত্যতা যাচাই করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ভ্যানচালক কারাগারে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি মাদ্রাসার ১৩ বছর বয়সী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে অভিযুক্ত ভ্যানচালক সাকিবকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলার একটি এলাকায় ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে ভ্যানচালক সাকিবের ভ্যানে করে মাদ্রাসায় ফিরছিল। পথে ভ্যানচালক ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়। গ্রেপ্তার সাকিব হোসেন রিফাইতপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের জাফের আলীর ছেলে।

পুলিশ বলছে, ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে আজ সকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগার পাঠিয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৩
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের বোরহোলে পড়ে দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে এই ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

লিগ্যাল নোটিশটি দেওয়া হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব; বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান; সেচ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী; তানোরের সহকারী প্রকৌশলী; রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক; তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)।

লিগ্যাল নোটিশে শিশু সাজিদের মৃত্যুর জন্য রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি বরেন্দ্রজুড়ে থাকা শত শত পরিত্যক্ত বোরহোল বন্ধ করা এবং অবৈধ গভীর নলকূপ স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

এই লিগ্যাল নোটিশে গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, শত শত পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপ জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয় বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে হাইকোর্ট ডিভিশনে জনস্বার্থে মামলা করা হবে।

পরিত্যক্ত বোরহোলের খোঁজ

এদিকে শিশু সাজিদের মৃত্যু এবং পরিত্যক্ত বোরহোল নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) রেজাউল আলম সরকার বিভাগের আট জেলার জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিভাগে বিএমডিএ ও বিএডিসি (সেচ) গভীর নলকূপ স্থাপন করে। অনেক ক্ষেত্রে গভীর নলকূপের পাইপের মুখটি অরক্ষিত বা উন্মুক্ত রাখা হয়। এতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দুর্ঘটনা রোধে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসকদের কাছে সংশ্লিষ্ট জেলার পাইপের মুখ অরক্ষিত বা উন্মুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ গভীর নলকূপের তথ্য একটি ছকে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত নলকূপের বোরহোলে পড়ে শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ব্যক্তিমালিকানায় অবৈধভাবে সেমিডিপ বসাতে এই বোরহোল করা হয়েছিল। এক বছর ধরে গর্তটি উন্মুক্ত পড়ে ছিল। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার প্রতারণা ও মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩২
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত

একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা এবং তাঁর বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর ও মারধরের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এই নির্দেশ দেন।

তুরিন আফরোজকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার বাদী তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।

তুরিন আফরোজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোর্শেদ হাসান শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০২২ সালে তুরিন আফরোজ ও তাঁর গাড়িচালক আমির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মনজুর আলম নাহিদ নামের একজন ব্যবসায়ী। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী মনজুর আলম নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে ‘নাবিশা এন্টারপ্রাইজ’-এর মাধ্যমে বহুমুখী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তাঁর অন্যতম ব্যবসা হলো ভারতে তৈরি অশোক ল্যা ল্যান্ড বাস/ট্রাক আমদানি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি ও লিজ দেওয়া।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তুরিন আফরোজ তাঁর কাছ থেকে নগদে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ২০২১ সালের ১ জুলাই কিস্তির ভিত্তিতে ৭৮ লাখ টাকায় বাস দুটি ক্রয় করেন। এর মধ্যে তিনি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও বাকি কিস্তির টাকা পরিশোধ থেকে বিরত থাকেন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ মনজুর আলম নাহিদ কিস্তির টাকা পরিশোধের বিষয়ে তুরিন আফরোজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি তাঁকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়। এরপর ২ এপ্রিল আবারও টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল তুরিন আফরোজের গাড়িচালক আমির হোসেন ৭–৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে মনজুর আলম নাহিদকে হুমকি দেন। পরদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে তুরিন আফরোজ ও আমির হোসেন ২০–২৫ জনকে নিয়ে বসুন্ধরায় মনজুর আলম নাহিদের বাসায় গিয়ে প্রায় ৩২ লাখ টাকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং তাঁকে মারধর করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে আটক করে পুলিশ। আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় পরদিন তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত