Ajker Patrika

রংমিস্ত্রি দুলালের স্বপ্ন এখন বিবর্ণ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
ছেলে-মেয়ের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধা দুলাল হোসেন। সম্প্রতি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব রামচন্দ্রপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছেলে-মেয়ের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধা দুলাল হোসেন। সম্প্রতি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের পূর্ব রামচন্দ্রপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের দুলাল হোসেন পেশায় রংমিস্ত্রি। কাজের সন্ধানে তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। জুটেছিল কাজও। তবে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন রাজধানীর উত্তরায় মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এখন ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটেন। তবে যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা এসেছিলেন, তা এখন ফিকে হয়ে গেছে।

দুলাল হোসেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রামচন্দ্রপুর গ্রামের জাহেরুল ইসলামের ছেলে। সরকারি সহায়তায় দেশের বাইরে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন। তবে ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হয় তাঁকে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর জীবন বদলে গেছে দুলালের। ঘটনার পর এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে ছোট মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। আগের মতো আর কাজও করতে পারেন না।

জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি হাতড়ে দুলাল জানালেন, সেই ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় ঢাকার উত্তরা-আজিমপুর এলাকায় আন্দোলনরত মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছোড়ে পুলিশ। সে সময় একটি গুলি দুলাল হোসেনের কোমরের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ দুলাল তখন রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কে পড়ে কাতরাতে থাকেন। এ সময় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে উত্তরা লেক ভিউ মেডিকেলে ভর্তি করান। সেখানে তাঁর একটি অপারেশন করা হয়। সেই অপারেশনে সব মিলিয়ে তাঁর প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। পরবর্তী সময়ে ২২ আগস্ট জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি করা হয় তাঁকে। এরপর আরও একটি অস্ত্রোপচার করা হয় সেখানে। সর্বশেষ থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়। চিকিৎসা শেষে ১৮ জুন দেশে ফেরেন দুলাল হোসেন। কিন্তু চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেও এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

দুলাল আক্ষেপ করে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা আর দুই লাখ টাকা হয়তো পেয়েছি।

কিন্তু তা দিয়ে কী হবে? আমি তো আর আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব না। কোনো কাজও করতে পারব না। ছোট তিনটি বাচ্চাকে কীভাবে মানুষ করব?’

দুলাল বলেন, ‘ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য প্রথমে যে সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তা আত্মীয়স্বজনরা দিয়েছেন। সেই টাকাও শোধ করতে পারিনি। একে তো কর্ম নেই, অন্যদিকে সন্তানদের খরচসহ সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে; সেই সঙ্গে মাথায় ঋণের বোঝা।’

বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে দুলাল বলেন, ‘পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা অপারেশনের মাধ্যমে এক করে দিয়েছে। এতে অনেক সমস্যা, জানি না ভবিষ্যতে কী হবে! আমার সন্তানদের কী হবে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস: এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুলের বিরুদ্ধে এবার মামলা

রক্ত কেনা যায় না—ইয়েমেনে নিমিশাকে ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি মাহদির পরিবারের

২৫ সেকেন্ডে ১২ গুলি, হাসপাতালে গ্যাংস্টারের শরীর ঝাঁঝরা

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহত ৪ জনের ময়নাতদন্ত হলো না, প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ডিআইজি

বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল: সাবেক এমপিসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত