Ajker Patrika

বছরে ৭ মাস ডুবে থাকে সাতক্ষীরা পৌরসভার অর্ধেক

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
বছরে ৭ মাস ডুবে থাকে সাতক্ষীরা পৌরসভার অর্ধেক

জলাবদ্ধতা যেন নিত্যদিনের সঙ্গী সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় বসবাসরত মানুষের। বছরে ৭ মাস এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তাঁদের অভিযোগ যেন অরণ্যে রোদন। দিনের পর দিন, এই অবস্থা চলতে থাকলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। 

সাতক্ষীরা পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত খুলনা বিভাগের প্রথম পৌরসভা সাতক্ষীরা। প্রায় ৩২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভাটিতে ৩ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস জলাবদ্ধ এলাকায়। শহরের ইটাগাছা, কামালনগর, মধুমোল্লারডাঙ্গী, বকচরা, রইচপুর, কুকরালী রাজারবাগ, বদ্দীপুর কলোনি, মধ্য কাটিয়া ও বাকাল এলাকার অধিকাংশ এলাকা জলাবদ্ধ। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের প্রায় ৭ মাস পানির তলে থাকে এলাকাগুলো। পৌরবাসীর অভিযোগ, পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাঁরা। স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। গৃহস্থালি কাজ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মহিলাদের। এমনকি এক বাসা থেকে অন্য বাসায় যেতে ভেলার সাহায্য নিতে হয় অনেককে। বদ্দীপুর কলোনি এলাকার বাসিন্দা আমিনুর রহমান জানান, ‘বছরের ৯ মাস সাপ-ব্যাঙের সাথে পানিতে থাকব, আর তিন মাস ভালো থাকব, এমনভাবে আমাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই যন্ত্রণা থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই। আমরা জলাবদ্ধতামুক্ত জনপদ চাই।’

একই এলাকার গৃহবধূ রেহেনা খাতুন বলেন, ‘বাচ্চাদের স্কুলে গেলে ভিজে যেতে হয়। গর্ত থাকায় রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না।’

একই চিত্র কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকার। সেখানকার বাসিন্দা আয়েশা খাতুন বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে গোটা এলাকা ডুবে গেছে। ঘরবাড়ি থেকে বের হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবছর আমরা পানিতে ডুবে গেলেও তার স্থায়ী কোনো সমাধান হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টির পানি ঘরের ভেতরে আসে। আমরা যে ঘরে ঘুমাই, সেখানে হাঁটুপানি। রান্নাঘর এমনকি গোয়ালঘরও ডুবে গেছে। ঘরের ভেতরে সাপ ঢোকে।’ 

ইটাগাছা এলাকার রাহিনুর রহমান বলেন, ‘ঘের ব্যবসায়ীরা এত প্রভাবশালী, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারও নেই।’

তবে ঘের ব্যবসায়ীদের এ নিয়ে দোষ দিতে নারাজ সাতক্ষীরা পৌরসভার সদ্য অপসারিত মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতী। তিনি বলেন, ‘শহরের পানি মূলত দুটো নদী দিয়ে সরে। এর একটি হলো বেতনা। অপরটি প্রাণসায়ের খাল হয়ে মরিচ্চাপ। দুটি নদীই নাব্যতাহীন। সুতরাং শুধু ঘের ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। পানি সরানোর ব্যবস্থা না থাকলে ঘের না থাকলেও জলাবদ্ধতা থাকবে।’

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে কাজ করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা। শুধু উপজেলা প্রশাসন দিয়ে এটা সম্ভব নয়। সম্প্রতি মধ্য কাটিয়া এলাকায় কিছু বাঁধ ছুটিয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনগণ। ইতিবাচক যেকোনো পদক্ষেপের পক্ষে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

আবদুল হামিদের দেশত্যাগে এবার কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ, খুলনায় পত্রিকা অফিসে আগুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত