Ajker Patrika

ক্যাম্পাসে ফেরেননি কুয়েট উপাচার্য, এক দফার হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের

খুলনা প্রতিনিধি
অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কুয়েটের শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কুয়েটের শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্যাম্পাস ত্যাগ করা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. হযরত আলী আজ মঙ্গলবার (২০ মে) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেননি। এমনকি ভারপ্রাপ্ত কাউকে দায়িত্বও দিয়ে যাননি।

এদিকে কুয়েট শিক্ষক সমিতির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকেরা। সভা শেষে আগামীকাল বুধবার বেলা ১টার মধ্যে কুয়েটে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত না হলে সাধারণ সভা করে এক দফার কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এর আগে কয়েকজন শিক্ষক নেতা ভিসির দপ্তরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। অবস্থান কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (আগামীকাল বেলা ১টা) ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম সম্পন্নসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করবেন; যাতে আমরা দ্রুত ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। এটা না হলে আমরা শিক্ষকেরা আগামীকাল আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘এটা যদি এমন হয়, উনার (ভিসির) সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারব না এবং এককভাবেই উনি উনার দায়িত্ব নিচ্ছেন, তাহলে এক দফা দাবি করতে হবে। উনি দায়িত্ব পালন করবেন কি না, উনাকেই (ভিসি) সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পারবেন কি না, আমরা উনাকে বলব, উনি দায়িত্ব পালন করতে পারলে, ক্যাম্পাস পরিচালনা করবেন, না পারলে উনি উনার মতো সিদ্ধান্ত নেবেন। আগামীকালও যথাসময়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভাইস চ্যান্সেলরের কার্যালয়ের সামনে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

কর্মসূচি সম্পর্কে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘১৪ মে ভিসি স্যারের সঙ্গে আমাদের যে এক্সিকিউটিভ বডির মিটিং হয়েছিল, সেখানে ভিসি স্যার আমাদের একটা গাইডলাইন দিয়েছিলেন। গাইডলাইন অনুযায়ী আমরা ভেবেছিলাম সমস্যার সমাধান হবে। গত রোববার আমরা ক্লাসে যাব, ভিসি স্যারকে এমনটা আশ্বস্ত করেছিলাম। শুধু একটা মিটিংয়ের (ডিসিপ্লিনারি) জন্য সবকিছু আটকে আছে। একটা মিটিং হলে আমরা ক্লাসে যেতে পারতাম। আমরা ভিসি স্যারকে সাত কার্যদিবস সময় দিয়েছিলাম। এর মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য। কিন্তু সেটা না হওয়ায় আমাদের অবস্থান কর্মসূচিতে যেতে হয়েছে।’

সাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘যেখানে ক্লাস আটকে আছে, এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় ছেড়ে তিনি দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে কীভাবে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন? কোনো আশার আলো দেখতে পাব না, এটা আমাদের জন্য হতাশাজনক। ভিসি মহোদয় বলেছেন, উনি আজ ফিরবেন। সেই হিসেবে আমরা লাস্ট উনাকে আগামীকাল বেলা ১টা পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে উনি অসম্পূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করবেন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই যেন দায়বদ্ধ হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারি।’

অপরদিকে প্রায় তিন মাস হতে চললেও কুয়েটের অচলাবস্থার অবসান না হয়ে ক্রমেই জটিলতার দিকে যাচ্ছে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার পর অনেকটা থমকে গেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তিন দফায় শিক্ষকদের কাছে খোলাচিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের শাস্তি মওকুফের কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া এবং শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে অটল থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এর মধ্যে অন্তবর্তীকালীন ভিসি গতকাল সোমবার সকালে কাউকে না বলেই ঢাকায় চলে যান। এমনকি তিনি একজন সিনিয়র ডিনকে মোবাইলে বিষয়টি জানালেও অফিসিয়ালি কাউকে দায়িত্ব দিয়েও যাননি। সে কারণে কুয়েট এখন একপ্রকার অভিভাবকহীন।

এর আগে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হলে পাঁচ দিন অভিভাবকশূন্য থাকে কুয়েট। পরে পয়লা মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ২ মে খুলনা এসেও পূর্বঘোষিত ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৪
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত