Ajker Patrika

বিদ্যুৎ বিভ্রাট: বেনাপোল ইমিগ্রেশনে বিপাকে পাসপোর্টধারীরা, কার্যক্রম ব্যাহত

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি  
বিদ্যুৎ না থাকায় শনিবার এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ না থাকায় শনিবার এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাসে তিন থেকে চার দিন নানান কারণ দেখিয়ে বেনাপোল বন্দর এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে ব্যাহত হচ্ছে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে বন্দর এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় আজ শনিবার সকালে এক ঘণ্টা ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল বলে জানা গেছে।

বাণিজ্যসংশ্লিষ্টরা জানান, স্থলপথে ভারতে যাতায়াতের জন্য ব্যবসায়ী বা পাসপোর্টধারীদের ৮০ শতাংশ বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে। এক কিলোমিটারের বন্দর এলাকায় স্থাপিত রয়েছে বন্দর, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিস। এ ছাড়া বাণিজ্যিক স্বার্থে এ অঞ্চলে গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, আমদানি ও রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও কয়েক শ প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এসব সেক্টরে অনলাইন সংযুক্ত হওয়ায় ম্যানুয়াল পদ্ধতি একেবারেই উঠে গেছে। এতে বিদ্যুৎনির্ভর হয়ে অনলাইন সার্ভারে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়।

কিন্তু বন্দর এলাকাটিতে প্রথম থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মহলের ক্ষোভ। মাসের মধ্যে কমপক্ষে চার দিন বিদ্যুৎ অফিস দিনভর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে। এ ছাড়া প্রতিদিন দু-একবার লোডশেডিং তো আছেই। এতে বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সচল রাখাতে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেয়ে বাধ্য হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প ব্যবস্থায় জেনারেটরের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়েছে। তবে টানা ৮-১০ ঘণ্টা এসব জেনারেটরের বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের সক্ষমতা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কখনো আমদানি বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে, আবার কখনো ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে।

এদিকে এসব প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পাসপোর্টধারীরা। যাত্রীসেবায় ইমিগ্রেশন ও বন্দরে এসি বা ফ্যান থাকলেও চালায় না কর্তৃপক্ষ। সরবরাহ নেই বিশুদ্ধ পানির। তবে ইমিগ্রেশন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীসেবা বাড়াতে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেও ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হয়নি।

ভারতফেরত পাসপোর্টধারীরা জানান, শনিবার বিদ্যুৎ না থাকায় ইমিগ্রেশনে এক ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে। বিদ্যুৎ থাকলেও এসি, ফ্যান চালায় না তারা। গরমে ভোগান্তি হয়। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, বিদ্যুতের অভাবে বাণিজ্য অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে। বন্দর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখার দাবি জানাচ্ছি।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্য এবং ২২ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে থাকে। বছরে সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় এ বন্দর থেকে। বর্তমানে জেনারেটরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বাণিজ্য সম্পাদন করতে হচ্ছে। বন্দর, কাস্টমস ইমিগ্রেশনে জেনারেটর থাকলেও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সাপ্লাই দিতে পারে না।

এ বিষয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি ইব্রাহিম জানান, শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকবে না জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আমাদের যে জেনারেটর আছে, সেটা একটানা ৩ ঘণ্টার বেশি সার্ভিস দিতে পারে না। এ কারণে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে পড়ায় এক ঘণ্টার মতো পাসপোর্টধারীদের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা থাকা জরুরি বলে জানান তিনি।

বেনাপোল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম হাসিবুল ইসলাম জানান, কোন এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করতে হলে আলাদা একটা সাবস্টেশন, ৩৩ কেবি লাইন স্থাপন ও আলাদা এক গ্রিড থেকে লোড নিতে হবে। কিন্তু এ ব্যবস্থা বেনাপোলে না থাকায় জরুরি কাজে বা দুর্যোগকালে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে বেনাপোল বন্দরকে গুরুত্ব দিয়ে ২০২০ সালে বেনাপোল গ্রিড স্থাপন করা হয়েছে। এ ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মচারীদের পদ-পদবি-বেতন কাঠামো নিয়ে পাল্টা অবস্থানে দুই পক্ষ

সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসা পেতে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে

দক্ষিণপন্থীদের কবজায় বাংলাদেশের রাজনীতি: বদরুদ্দীন উমর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত