Ajker Patrika

বিয়ে করলেন ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার ২৫ বছর বয়সী আব্বাস

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ৩২
বিয়ে করলেন ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার ২৫ বছর বয়সী আব্বাস

বাগেরহাটের বাসিন্দা ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার আব্বাস শেখ (২৫) বিয়ে করেছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনার ডাকবাংলো এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে ৩৭ ইঞ্চি উচ্চতার সোনিয়া খাতুনকে (২০) বিয়ে করেন তিনি। দুই পরিবারের সম্মতিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।

নববিবাহিত আব্বাস শেখ রামপাল উপজেলার শ্রিফলতলা গ্রামের আজমল শেখের ছেলে। তিনি রামপাল সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর নববিবাহিত স্ত্রী সোনিয়া খাতুন খুলনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাঁর উচ্চতা ৩৭ ইঞ্চি। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে তাঁর পড়ালেখা বিলম্বিত হয়।

ছোটবেলা থেকেই উচ্চতার কারণে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজনের কাছে হাসিঠাট্টার পাত্র ছিলেন আব্বাস। মানুষের হাসিঠাট্টা ও প্রতিবন্ধিতা পেছনে ফেলে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। স্নাতক শেষে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। স্ত্রীকেও উচ্চশিক্ষিত করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন আব্বাস শেখ।

আব্বাস শেখ বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকে আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করত। তবে আমি কারও কথা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। বন্ধুরা বলত, আমি কখনো বিয়ে করতে পারব না। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। আল্লাহর রহমতে বিয়ে করেছি। শান্তিতে সংসারও করব।’

নবদম্পতি আব্বাস শেখ ও সোনিয়া খাতুন। ছবি: সংগৃহীতআব্বাস আরও বলেন, ‘বছর দেড়েক আগে পরিবারের পক্ষ থেকে পাত্রী পছন্দ করে রাখা হয়েছিল। গত ২০ অক্টোবর দুই বোনজামাইসহ আমি দেখতে গিয়ে সোনিয়াকে পছন্দ করি। আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি তাকে বাড়ি নিয়ে এসেছি। পরিবারের পছন্দে বিয়ে করেছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারি।’

আব্বাসের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘ছোটবেলায় এক হাতে বই আর এক হাতে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। অনেক কষ্টে মানুষের কথা শুনে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। আমার দুই মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে আব্বাস। অনেক কষ্টের ধন আমার। ওর জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।’

আব্বাসের বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শারীরিকভাবে কিছুটা খাটো হলেও আব্বাস বেশ সামাজিক মানুষ। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁকে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। বিয়েতে আমাকে দাওয়াত করেছিলেন। তাঁর গায়েহলুদে উপস্থিত ছিলাম। নবদম্পতিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে হাসিঠাট্টা না করে তাঁদের প্রতিটি কাজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখন আর সমাজের বোঝা নয়। সঠিকভাবে লালনপালন করতে পারলে তাঁরা সম্পদ হতে পারেন।’ সবাইকে প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের পাশে থাকার অনুরোধ জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত