Ajker Patrika

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুদাম থেকে ৩১২ বস্তা চাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
Thumbnail image
গুদাম থেকে চাল আলমসাধুতে তোলা হচ্ছে। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

যশোরের মনিরামপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩১২ বস্তা চাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। চাল পরিবেশকের অভিযোগ, আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর গুদাম থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন আলমসাধু ও ইঞ্জিন ভ্যানে করে ৫০ কেজির ৩১২ বস্তা চাল নিয়ে গেছেন।

চাল পরিবেশক মনিরুজ্জামানের ছেলে সাগরের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলাউদ্দিনের লোকজন গুদাম থেকে চাল সরিয়ে নেওয়ার পর তিনি উপজেলা খাদ্য অফিস ও পুলিশকে ঘটনা জানিয়েও প্রতিকার পাননি।

উপজেলার ঝাঁপা বাজারের সাগর বলেন, ‘বাজারে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে খাদ্যবান্ধব চাল বিক্রি করতাম। সেখানে নিরাপত্তাবোধ না করায় গতকাল সোমবার অক্টোবর মাসের চাল সরকারি গুদাম থেকে তুলে আমার বাড়ির পাশের একটি গুদামঘরে রেখেছি। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে চাল বিক্রি করতে উপকারভোগীদের খবর দেওয়া হয়েছিল। সকালে কার্ডধারীরা চাল নিতে আসার আগেই আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন দিয়ে গুদামের তালা ভেঙে ভ্যান ও আলমসাধু বোঝাই করে চাল নিয়ে গেছেন।’

চাল পরিবেশক সাগর আরও বলেন, ‘আলাউদ্দিন চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে গত সেপ্টেম্বর মাসের চাল ঝাঁপা বাজারের আমাদের ঘরে রেখে বিতরণ করেছিলাম। এখন তাঁর লোকজন আমাদের সেই গুদাম ঘরটি দখলে নিয়েছেন। এ জন্য খাদ্য অফিসের পরামর্শে এবারের চাল তুলে ঝাঁপা বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে আমার বাড়ির পাশের রাস্তার মোড়ের একটি ঘরে রেখেছিলাম।’

সাগর অভিযোগ করেন, ‘চাল নিয়ে যাওয়ার খবর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে ফোন করে জানালেও কেউ আসেননি। ইউএনওকে বারবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।’

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, ‘চাল তুলে ডিলার খারাপ উদ্দেশ্যে নিজের বাড়িতে রেখেছিলেন। আজ সকালে ইউনিয়নের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিল সেখানে। আমরা বলেছি, চাল এখানে রাখা যাবে না। ঝাঁপা বাজারের আগের সেই ঘরে নিয়ে এসো। আমরা সঙ্গে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে চাল বিতরণ করব। সেই হিসেবে গ্রামের সাধারণ মানুষ চাল ডিলারের বাড়ি থেকে সরিয়ে এনে ঝাঁপা বাজারের ঘরে রেখেছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের লোক চাল পেয়েছে। জামায়াত-বিএনপির কাউকে দেয়নি। আমরা বলেছি, সেটা আর হবে না। এ জন্য চাল ঝাঁপা বাজারে এনে রাখা হয়েছে। আমরা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে চাল বিতরণ করব।’

মনিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা দিয়েছিলাম ডিলার নিরাপত্তাহীনতা বোধ করলে তিনি নিজের হেফাজতে রেখে চাল বিতরণ করতে পারবেন। সেই হিসেবে ঝাঁপা বাজারের ডিলার চাল তুলেছিলেন। সকালে ডিলার চাল ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ফোনে জানিয়েছেন। বিষয়টি জানাতে আমি ইউএনওকে ফোন করেছি। তিনি রিসিভ করেননি।’

এ বিষয়ে জানতে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মেহেদী মাসুদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত