Ajker Patrika

দৌলতপুরে পদ্মায় নতুন করে পানি না বাড়লেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যার্তদের

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
চিলমারী ইউনিয়নের পানিবন্দী গ্রাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিলমারী ইউনিয়নের পানিবন্দী গ্রাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে পানি না বাড়লেও দুর্ভোগ কমেনি পানিবন্দী মানুষের।

পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি সর্বশেষ ২ সেন্টিমিটার বেড়ে ১২ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পানির এই উচ্চতা অপরিবর্তিত রয়েছে। বিপদসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার হওয়ায় বর্তমানে পানি বিপদসীমার চেয়ে শূন্য দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।

উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। প্লাবিত হয়েছে বহু গ্রাম, ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা ও ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানির সঙ্গে বেড়েছে পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব, গবাদিপশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে চারণভূমি ও ফসলের মাঠ। পদ্মার তীরঘেঁষা ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের চরের আবাদি জমিও প্লাবিত হয়ে গেছে। সেখানে নদীপাড়ের মানুষজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি প্রবেশ করায় ১৭টি প্রাথমিক ও ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। দেখা দিয়েছে, সুপেয় পানির তীব্র সংকট,। সবমিলিয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে, গত বুধবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পানিবন্দীদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দীদের জন্য ২০ টন চালের বরাদ্দ দিয়েছে সরকার, যা ইতোমধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে। এছাড়া ৩২০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

সরকারি সহায়তার বিষয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, “আমি আজকে ৫ টন চাল পেয়েছি। নৌকায় করে পানিবন্দীদের বিতরণের জন্য আমরা এখনই বের হবো। তবে নদীতে আজ নতুন করে পানি বাড়েনি।”

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, “নতুন করে পানি না বাড়লেও মানুষের দুর্ভোগ কাটেনি। সুপেয় পানির সংকট, খাবার সংকট ও গবাদিপশু নিয়ে এখানকার মানুষ বেশি বিপাকে রয়েছে। আমি আমার ইউনিয়নের জন্য এখন পর্যন্ত ১০ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি, যা পানিবন্দী অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে পানিবন্দীদের মাঝে সরকারের বরাদ্দকৃত চাল পৌঁছে দিয়েছি, যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২০ টন চাল পেয়েছি। প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ৩২০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত