Ajker Patrika

যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

চৌগাছা প্রতিনিধি
Thumbnail image

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত সোমবার রাত আটটার দিকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তবে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের চাচাতো ভাই ফন্টু চাকলাদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহীসহ ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতারা গত রোববার রাতে গালিগালাজ ও খুনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী। তিনি সদর উপজেলার খালধার রোডের বাসিন্দা।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শাহীন চাকলাদারের চাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু (৪৫), আশিকুল ইসলাম বাধন (৪০), রওশন ইকবাল শাহী (৩২), বাবুল (৪৫), ফাহমিদ হুদা বিজয় (২৫), তাপস (৩৫), নূরনবী, মেহেদী হাসান রনিসহ (৩০) অজ্ঞাত আরও ৩–৪ জনের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। ফন্টু চাকলাদার হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এবং তিনি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। অন্যরা ফন্টুর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সহযোগী। ফন্টুর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করায় ফরিদের ওপর ক্ষিপ্ত হন ও মেরে ফেলার ছক কষতে থাকেন। ২৭ জুন রাত আড়াই টার দিকে তাঁরা দুইটি গাড়িতে করে বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ ফরিদের। এ সময় অভিযুক্তরা তাঁকে খুন করে লাশ গুমের হুমকি দেন।

তবে উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহাম্মেদ লিখিত এজাহারে ফন্টু চাকলাদারের সম্পূর্ণ পরিচয় দিলেও অন্যদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করেননি। তবে তাঁদের সম্পূর্ণ ঠিকানা দেওয়ায় জানা গেছে, তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী। এর মধ্যে ফারাজী আশিকুর রহমান বাধন শহর আওয়ামী লীগের নেতা। রওশন ইকবাল শাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি একদিন আগে (২৬ জুন) যবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মী রিয়াদ হত্যা মামলায় জামিনে কারামুক্ত হন। ফাহমিদ হুদা বিজয় জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেহেদী হাসান রনি পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক।

হুমকি ও গালিগালাজের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে উপজেলা চেয়ারম্যানকে ফেনসিডিল ফরিদ বলে ডাকাডাকির কথা শোনা গেছে। কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর চেয়ারম্যানের বাস ভবনের মূল গেট ভাঙার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে। বাসভবনে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে গালিগালাজ করার কথা শোনা যায়। 
মোবাইল ফোনে মোস্তফা ফরিদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, তাঁকে খুন করতে পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করা হয়েছে। তিনি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। 
তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী বলেন, ‘অভিযোগের বিষয় আমি জানা না। আমার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করছে। আর আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসা চিনি না। তবে গতকাল (রোববার) রাতে আমরা শহরে ছিলাম। খালধার রোডে আমার গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।’

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
এ দিকে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধিকে এভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া নিন্দনীয় কাজ। আমি এর বিচার দাবি করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত