Ajker Patrika

সেমাই না আনায় অভিমানে নিরুদ্দেশ, ৩৪ বছর পর ফিরলেন সেই ঈদুল ফিতরেই

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ৫৪
সেমাই না আনায় অভিমানে নিরুদ্দেশ, ৩৪ বছর পর ফিরলেন সেই ঈদুল ফিতরেই

১৯৯০ সালে ঈদুল ফিতরে রফিকুল ইসলামের বয়স তখন ২৭ বছর। এই ঈদের প্রধান অনুষঙ্গই থাকে সেমাই। কিন্তু বাবা সেমাই কেনেননি। সেই অভিমানে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হন তিনি। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৩৪টি বছর। আবার এসেছে ঈদুল ফিতর। এতো বছর পর অভিমান ভেঙে বাড়ি ফিরেছেন আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের নৈশ্বেরকাটি গ্রামের মতলেব সরদারের বড় ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম। 

রফিকুল অবশ্য এর মধ্যে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন। এখন তিন সন্তানের জনক, এক ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা তিনি। বয়স এখন ৬১ বছর। বাবা মতলেব সরকার বেশ কিছু দিন আগে মারা গেছেন। নাতি, নাতনিসহ ছেলেকে ফিরে পেয়ে মায়ের যেন আর আনন্দের সীমা নেই! 

আজ বুধবার সরেজমিন কথা হয় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সালে রোজার ঈদে সেমাই না আনাকে কেন্দ্র করে মা-বাবার ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। সেই থেকে কুমিল্লার মুরাদপুর উপজেলার চুলুরিয়া গ্রামে বসবাস করি।’ কিন্তু কুমিল্লায়-ই কেন গেলেন, এ প্রশ্নে নিরুত্তর থাকেন রফিকুল। 

বাবার ওপর অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছিলেন রফিকুল (৬১)তিনি জানান, চুলুরিয়া গ্রামে বিয়ে করে সংসার পাতেন। এখন এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। কথা বলে বোঝা গেল, সন্তানদের আবদারেই বাবার বাড়ি ফিরে এসেছেন রফিকুল। 

রফিকুলের ছেলে রশীদ সরদার বলেন, ‘দাদার ভিটায় আসবার ইচ্ছে বহুদিনের। বাবার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে রমজানের মধ্যে গত সোমবার বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পাই। এরপর চাচারা গিয়ে আব্বাকে নিয়ে আসে।’ 

রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই মহিদুল সরদার বলেন, ‘আমার বড় ভাই ঈদের দিন আব্বা সেমাই না আনার কারণে আম্মার সঙ্গে রাগ করে বাড়ি থেকে চলে যায় ১৯৯০ সালে। চলে যাওয়া পর আমাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল ১৯৯২ সাল পর্যন্ত। এরপর থেকে বড় ভাইকে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও পাইনি। হঠাৎ করে সোমবার রাত ১০টার দিকে আমাদের গ্রামের মসজিদে আমার বড় ভাইয়ের ছেলে আব্দুর রশিদ সরদার এসে উপস্থিত হয়। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার কাছ থেকে সব কিছু শুনে আমার অন্য ভাইদের সঙ্গে কথা বলে চুলুরিয়া গ্রামে গিয়ে তাদের নিয়ে আসি। এখন আমরা সবাই অনেক খুশি।’ 

এত দিন পর ছেলেকে পেয়ে যারপরনাই খুশি রফিকুল ইসলামের মা শুকজান বিবি। তিনি বলেন, ‘আমার বড় ছেলে রফিকুল ইসলামকে আমরা দীর্ঘ ৩৪ বছর পর আজ দেখতে পেলাম। আমার বুকের ধন ফিরে এসেছে, এতে আমরা সবাই খুশি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত