Ajker Patrika

বাজারের দোকানে বসে চেয়ারম্যান দিচ্ছেন ইউপির সেবা, ভোগান্তিতে মানুষ

দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া
বাজারের দোকানে বসে চেয়ারম্যান দিচ্ছেন ইউপির সেবা, ভোগান্তিতে মানুষ

দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রায় চার মাস ধরে ঠিকমতো অফিস করছেন না। নিজ এলাকায় বাজারের একটি দোকানে বসে দিচ্ছেন ইউপির সেবা। এই কারণে পরিষদেও নিয়মিত থাকছেন না ইউপি সচিব। এতে সেবা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ। এসব অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চর সাদীপুর ইউপির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় লোকজন জানান, চলতি বছরের ১১ আগস্ট ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সাদীপুর ও ঘোষপুর গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় প্রতিপক্ষের থেকে হুমকি পেয়ে চেয়ারম্যান পরিষদে না এসে তাঁর নিজ এলাকা ঘোষপুর বাজারের একটি দোকানে বসে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সেখানে একজন উদ্যোক্তা কাজ করছেন। চেয়ারম্যান শুধুমাত্র জরুরি সভা করতে পরিষদে আসেন। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্য এলাকার (৫,৬, ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) হাজারো মানুষ।

উপজেলার ১১ নম্বর চর সাদীপুর ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, আজ বুধবার পরিষদে আসেননি চেয়ারম্যান। উপস্থিত ছিলেন না সচিব ও উদ্যোক্তা। দরজায় ঝোলানো রয়েছে তালা। দুজন গ্রাম পুলিশের সদস্য পতাকা টাঙিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ফিরে যাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উদ্যোক্তা বলেন, ‘চেয়ারম্যান আসেন না। সচিব এসে চলে গেছেন। শুধু দুজন গ্রাম পুলিশ পরিষদে আছেন।’

গ্রাম পুলিশের সদস্য মোজাম্মেল বলেন, ‘লোকজন এসে বকাবাজি করে প্রতিদিন ফিরে যান। মারামারির পর থেকেই এই অবস্থা। আমি ছোট চাকরি করি। এসব নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।’

সরকারি চাকরিজীবী হায়দার আলী বলেন, ‘ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম। গত সোমবার পরিষদে একটি প্রত্যয়ন নেওয়ার জন্য গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান, সচিব কেউই নেই। ফিরে আসতে হয়েছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ পরিষদে এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’ দ্রুত সমস্যার সমাধানের দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন লাগবে। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় মানুষের কোনো কাজই হচ্ছে না।’ আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোগান্তি দেখার কেউ নেই।’

 ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু বক্কর বলেন, ‘গত তিন মাসে শুধু তিনটা ট্যাক্স মিটিংয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আর একদিনও চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। বাজারে সাব অফিস খুলেছে। সেখানে ৫,৬, ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা যান না।’ তাঁর দাবি, তিনি বিষয়টি মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইউপির সচিব আবু সোহেল মুহাম্মদ রানা আজকের পত্রিকাকে জানান, মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তিনি সমস্যা সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখন থেকে চেয়ারম্যান নিয়মিত পরিষদে থাকবেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে পরিষদে নিয়মিত উপস্থিত না থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মোবাইল ফোনে কথা হলে চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে ঝামেলা ছিল, সেটা মীমাংসা হয়ে গেছে। এরপরও আমি বাজারে বসে নিয়মিত সেবা দিচ্ছি। গতকাল মঙ্গলবার পরিষদে কম্বল বিতরণের জন্য গিয়েছিলাম।’ ইউনিয়ন পরিষদে নিয়মিত অফিস না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোনো উত্তর দেননি।

কুমারখালীর ইউএনও মো. মাহবুবুল হক বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত