Ajker Patrika

বন্ধ কারখানায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস প্রায় সাত বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা শ্রমিকদের অনেকে এখন বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। তবে কর্তৃপক্ষ দাবি, কারখানার বিশাল প্রাঙ্গণে বেসরকারি সহযোগিতায় একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু করা হবে।

সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের মাগুরা এলাকায় ৩০ একর জায়গায় এই কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮০ সালে। কার্যক্রম শুরু হয় তিন বছর পর। এখানে একসময় দেড় হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করতেন। মূল ইউনিট ও নীল কমল ইউনিটের আওতায় ৩৯ হাজারের বেশি টাকু (সুতার লাটাই) ঘুরত প্রতিনিয়ত। তবে এই জৌলুশ বেশি দিন থাকেনি। ১৯৯৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভর্তুকি গুনে মিলটি চালু রাখে সরকার। ২০১৭ সালের শেষের দিকে এটি ভাড়া নেয় নারায়ণগঞ্জের ট্রেড লিংক লিমিটেড। কিন্তু লোকসান হতে থাকায় এক বছর চালানোর পর অক্টোবর মাসে মিল বন্ধ ঘোষণা করে ট্রেড লিংক কর্তৃপক্ষ।

এখন সাত বছর ধরে একটানা মিলটি বন্ধ থাকায় মরচে ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি দেখভালের জন্য ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলসকে কেন্দ্র করে এলাকায় গড়ে ওঠে বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এখন শ্রমিক ও অন্যান্য পেশার লোকদের দাবি, জেলার একমাত্র ভারী এ শিল্পপ্রতিষ্ঠান দ্রুত চালু করা হোক।

কারখানার সাবেক শ্রমিক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মিলটি বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যায়। এই মিলের কারণে মিলবাজার প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকাটা জমজমাট ছিল। মিলটি পুনরায় চালু হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাই গণমানুষের দাবি, মিলটি চালু হোক।’

আরেক শ্রমিক আবিদুর রহমান বলেন, ‘আমি মিলের শ্রমিক ছিলাম। এখন বেকার। আমরা দুঃসহ যন্ত্রণায় আছি। আমরা চাই মিলটি চালু হোক। তাহলে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করতে পারব।’

মিলবাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, কারখানার প্রায় ১০০ বিঘা জমি পড়ে আছে। কোনো কাজে আসছে না। এটি চালু হলে বাজার বা আশপাশে অনেক উন্নয়ন হবে।

এ নিয়ে কথা হলে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, বিশাল এলাকাজুড়ে স্থাপিত কারখানার জমিতে একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস বন্ধ রয়েছে। বন্ধের কারণ হলো লস খাওয়া। আমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি যেটা জানতে পেরেছি, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে বিশাল এই জায়গায় একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত