Ajker Patrika

বাঁশ-কলাগাছের অস্থায়ী শহীদ মিনারই ভরসা

সাতক্ষীরা ও আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ৩১
বাঁশ-কলাগাছের অস্থায়ী শহীদ মিনারই ভরসা

ভাষা আন্দোলনের সাত দশক পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরার ৭৩ শতাংশেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়নি কোনো শহীদ মিনার। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালনে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে কাজ চালাতে দেখা যায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে। অন্যদিকে বরগুনার আমতলী উপজেলায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই। ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অস্থায়ী শহীদ মিনারই ভরসা শিক্ষার্থীদের। 

সাতক্ষীরা জেলা ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ১ হাজার ৭৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪৫৮টিতে শহীদ মিনার আছে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯৩টিতে এখনো শহীদ মিনার তৈরি করা হয়নি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা আরও নাজুক। ১ হাজার ৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ১১২টিতে। 

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পরানদহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু সাঈদ জানান, তাঁর বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। ফলে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে স্কুলে ভাষা দিবস পালন করা হয়। 

রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এ জন্য পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।’ 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে স্থানীয়দের সহায়তায় শহীদ মিনার নির্মাণের। তবে অর্থসংকটসহ বিভিন্ন কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। 

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ জানান, যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, ভাষা আন্দোলন বা তার তাৎপর্য সেই সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কীভাবে জানবে? এটা খুবই দুঃখজনক! 

সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান কবীর বলেন, জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ৬৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে কোনো শহীদ মিনার নেই। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঁশ বা কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বরগুনার আমতলী উপজেলার ২২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০০টিতে শহীদ মিনার নেই। অর্থাৎ ৮৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী মিনার নির্মাণ করে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে। 

জানা গেছে, আমতলী উপজেলায় ২২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩টি নিম্নমাধ্যমিক, ২৭টি মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ২৯টি এবং সাতটি কলেজ রয়েছে। উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি কলেজ ও ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। অন্যদিকে উপজেলার কোনো মাদ্রাসাতেই শহীদ মিনার নেই। 

আমতলীর ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘ভাষাশহীদদের পরিচয় জানতে এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আওয়ামী লীগকেও পথভ্রষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা

গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের বিবৃতিতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত