Ajker Patrika

২ মার্চের মধ্যে সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদনের দাবিতে ডিআরইউর আলটিমেটাম

অনলাইন ডেস্ক
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ১৩ বছরে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে ১১৫ বার। সর্বশেষ ২৭ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২ মার্চ ধার্য করা হয়। এই তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আলটিমেটাম দিয়েছে ঢাকাভিত্তিক রিপোর্টারদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

সংগঠনটি বলছে, এই তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন জমা না দিলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার ডিআরইউর সামনে সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদ আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। পাশাপাশি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে আগামীকাল বুধবার মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবেও বলে জানান তাঁরা।

সংগঠনটির সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘সবাই সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাই। যারা আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে চেয়েছেন, পকেটে টাকা ভরেছেন, সরকারের টাকায় বিদেশে গেছেন, আলিশানভাবে থেকেছেন—ইনশা আল্লাহ, তাঁদেরও বিচার করবে এই সাংবাদিক সমাজ।’

আবু সালেহ আকন বলেন, ‘আজকের সমাবেশ থেকে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের কথা এসেছে। আমরা জেনেছি, আগামী ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। আমরা ২ মার্চ পর্যন্ত দেখব। যদি ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিল করা না হয়, তাহলে আমরা সংগ্রাম কমিটি গঠন করে রাস্তায় নামব এবং জোরালোভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব। এ ছাড়া এই হত্যার বিচারের দাবিতে আগামীকাল বুধবার মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।’

ডিআরইউর সভাপতি বলেন, গত ১৩ বছরেও এই হত্যার বিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট ছিল, তার প্রমাণ হচ্ছে, এই হত্যার বিচারকে তারা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত ছিল। তার প্রমাণ হচ্ছে, আমরা এখনো খুনিদের নাম জানতে পারিনি। সেই সময় শেষ হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগ নেই। এখন বিপ্লবী সরকার ক্ষমতায়। আমরা তাদের কাছে আশা করছি, এই হত্যার বিচার পাব। যদি না পাই, আপনারা মনে রাখবেন, কেয়ামত পর্যন্ত এই হত্যার বিচার দাবি করে যাব আমরা।’

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে ডিআরইউ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

সমাবেশে সিনিয়র সাংবাদিকেরা দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যারা মাঠের সাংবাদিক হিসেবে তখন সাগর-রুনির বাসায় গিয়েছি, তারা কেউ হত্যা বিচারের দাবি থেকে সরে দাঁড়াব না। আমরা আগামী বছরের এই দিনে বিচারের দাবি আর করতে চাই না। অতি দ্রুত আমাদের এই দাবি বাস্তবায়ন করুন।’

সাংবাদিকেরা আরও বলেন, ডিআরইউর আঙিনায় দাঁড়িয়ে অনেক প্রতিবাদ-সমাবেশ করা হয়েছে। আগামীতে প্রতিবাদ এই আঙিনায় আর থাকবে না। আগামী দুই মাস সময় দেওয়া হলো, চার্জশিট না দিলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করা হবে।

এ সময় সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দিনটি সাংবাদিক সুরক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করারও দাবি জানান সাংবাদিকেরা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি। এ ঘটনায় মামলার পর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। কবে নাগাদ মামলার তদন্ত শেষ হবে, তা বলতে পারছেন না তদন্তসংশ্লিষ্টরা। থানা পুলিশ-ডিবি-র‍্যাবের হাত ঘুরে বর্তমানে মামলার তদন্তভার পেয়েছে পুলিশ বুর‍্যো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সব মিলিয়ে চারবার বদল হয়েছে তদন্ত সংস্থা। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত সংস্থা পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তদন্তের দায়িত্ব থেকে র‍্যাবকে সরিয়ে পিবিআইকে দায়িত্ব দেন হাইকোর্ট। এরপর নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় এই মামলায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত