সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখীপুরের প্রতিমা বংকী গ্রামে বৃষ্টির প্রত্যাশায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাদামাটির খেলায় মাতে শিশু-কিশোরেরা। দল বেঁধে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচলিত লোকগান ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দেরে তুই...’ গেয়ে-নেচে কাদা-জল মেখে করেছে ‘মাগুন মাপা উৎসব’। কাকতালীয়ভাবে আজ বুধবার ভোরে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো এই এলাকায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, চৈত্র-বৈশাখের তীব্র রোদ ও অসহনীয় গরমে গ্রামের চারদিকে যখন অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে, দীর্ঘদিনেও বৃষ্টির দেখা মেলে না, সেচের অভাবে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে যায়, ঠিক এই সুযোগে গ্রামের শিশু-কিশোর ও যুবকেরা একত্র হয়ে বৃষ্টির প্রত্যাশায় গান গেয়ে চাল তুলে শিরনি রান্না করে খায়। চাল তোলার এই প্রক্রিয়াটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘মাগুন মাপা উৎসব’।
জানা গেছে, মাগুন মাপা উৎসবে দলীয়ভাবে উচ্চ স্বরে গান গেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টির প্রত্যাশা করে গ্রামের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা। তারা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি হাজির হয় বৃষ্টির গান নিয়ে। বাড়ির নারীরা কলসি ভরে পানি নিয়ে উঠানে ঢেলে দেন। আর সেই কাদামাটিতে গড়াগড়ি করে চলে বৃষ্টির গান। সেই সঙ্গে মহিলারা খুশি হয়ে দেন চাল, ডাল, সবজি, টাকা। সবশেষে ওই চাল, ডাল, সবজি দিয়ে শিরনি বা খিচুড়ি রান্না করে উৎসবে মেতে ওঠে শিশু-কিশোরেরা।
এখন মধ্যবয়সী আজমত আলীও একসময় ‘মাগুন মাপা উৎসব’ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমরাও এমনটি করেছি। বিষয়টি এক প্রকার আনন্দ মিছিলের মতো। শিশু-কিশোরদের মিছিলটি কোনো বাড়িতে প্রবেশ করতেই প্রথমে দলনেতা বলবে, তার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই সমস্বরে বলে ওঠে—“সত্তররে সত্তর, আইলাম বাড়ির ভেত্তর, আইলাম রে ভাই হরিয়া, হাত্তির কাঁন্ধে চড়িয়া...। ” বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির উঠানে পানি ঢেলে দিয়ে কাদামাটিতে খেলা করে শিশু-কিশোরেরা। পরে বাড়ির গৃহিণী কুলায় করে তাঁদের সাধ্যমতো চাল, ডাল, সবজি দিয়ে বিদায় দেন। বিদায় বেলায় প্রচলিত লোকগান—“আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে” গেয়ে চলে যায় সবাই। আর কোনো বাড়িতে কাদামাটি খেলার জন্য পর্যাপ্ত পানি এবং ঠিকমতো চাল-ডাল-সবজি না পেলে ওই বাড়ির জন্যও রয়েছে পৃথক পৃথক ছন্দ মিলিয়ে দলীয় গান।’
ওই গ্রামের গৃহিণী হাজেরা বেগম বলেন, ‘তীব্র গরমে গাঁয়ের শিশুরা বাড়িতে এসে কাদা-পানি দিয়ে খেলা করে গান গায়। বাড়ির গৃহিণীরা শিশুদের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়। সামান্য চাল-ডাল পেলেই তারা বেশ খুশি হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলার বোয়ালী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক লিটন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা মূলত কোনো ধর্মীয় রীতি-নীতি নয়। গ্রামীণ শিশু-কিশোরদের একটি প্রচলিত উৎসব। এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরেরা আনন্দে মেতে ওঠে, খিচুড়ি রান্না করে একবেলা খেয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এই অঞ্চলে এ রকম হয়ে আসছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি সা’দত কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও চর্যাপদ গবেষক অধ্যাপক আলীম মাহমুদ বলেন, ‘যখনই মানুষের ওপর কোনো দুর্যোগ নেমে আসে, তখন বিভিন্নভাবে তারা প্রকৃতির কাছে সহায়তা চায়। আমাদের দেশে বিশেষ করে মার্চ-এপ্রিলে যখন বড় ধরনের খরা দেখা দেয়, বৃষ্টির অভাবে মাঠ-ঘাট চৌচির হয়ে যায়, কৃষকের খেতের ফসল ও গাছপালা মরে যায়, তখন সাধারণ মানুষ রাতের বেলায় দল বেঁধে বন্দনা গান গেয়ে বাড়িতে বাড়িতে মাগুন মাপত। বন্দনা গীত পরিবেশন করে মূলত সৃষ্টিকর্তা বা প্রকৃতির কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করাই হচ্ছে মাগুন মাপা উৎসব হিসেবে পরিচিত। এটি বাঙালির পুরোনো দিনের সংস্কৃতি।’
টাঙ্গাইলের সখীপুরের প্রতিমা বংকী গ্রামে বৃষ্টির প্রত্যাশায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাদামাটির খেলায় মাতে শিশু-কিশোরেরা। দল বেঁধে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচলিত লোকগান ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দেরে তুই...’ গেয়ে-নেচে কাদা-জল মেখে করেছে ‘মাগুন মাপা উৎসব’। কাকতালীয়ভাবে আজ বুধবার ভোরে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো এই এলাকায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, চৈত্র-বৈশাখের তীব্র রোদ ও অসহনীয় গরমে গ্রামের চারদিকে যখন অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে, দীর্ঘদিনেও বৃষ্টির দেখা মেলে না, সেচের অভাবে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে যায়, ঠিক এই সুযোগে গ্রামের শিশু-কিশোর ও যুবকেরা একত্র হয়ে বৃষ্টির প্রত্যাশায় গান গেয়ে চাল তুলে শিরনি রান্না করে খায়। চাল তোলার এই প্রক্রিয়াটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘মাগুন মাপা উৎসব’।
জানা গেছে, মাগুন মাপা উৎসবে দলীয়ভাবে উচ্চ স্বরে গান গেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টির প্রত্যাশা করে গ্রামের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা। তারা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি হাজির হয় বৃষ্টির গান নিয়ে। বাড়ির নারীরা কলসি ভরে পানি নিয়ে উঠানে ঢেলে দেন। আর সেই কাদামাটিতে গড়াগড়ি করে চলে বৃষ্টির গান। সেই সঙ্গে মহিলারা খুশি হয়ে দেন চাল, ডাল, সবজি, টাকা। সবশেষে ওই চাল, ডাল, সবজি দিয়ে শিরনি বা খিচুড়ি রান্না করে উৎসবে মেতে ওঠে শিশু-কিশোরেরা।
এখন মধ্যবয়সী আজমত আলীও একসময় ‘মাগুন মাপা উৎসব’ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমরাও এমনটি করেছি। বিষয়টি এক প্রকার আনন্দ মিছিলের মতো। শিশু-কিশোরদের মিছিলটি কোনো বাড়িতে প্রবেশ করতেই প্রথমে দলনেতা বলবে, তার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই সমস্বরে বলে ওঠে—“সত্তররে সত্তর, আইলাম বাড়ির ভেত্তর, আইলাম রে ভাই হরিয়া, হাত্তির কাঁন্ধে চড়িয়া...। ” বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির উঠানে পানি ঢেলে দিয়ে কাদামাটিতে খেলা করে শিশু-কিশোরেরা। পরে বাড়ির গৃহিণী কুলায় করে তাঁদের সাধ্যমতো চাল, ডাল, সবজি দিয়ে বিদায় দেন। বিদায় বেলায় প্রচলিত লোকগান—“আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে” গেয়ে চলে যায় সবাই। আর কোনো বাড়িতে কাদামাটি খেলার জন্য পর্যাপ্ত পানি এবং ঠিকমতো চাল-ডাল-সবজি না পেলে ওই বাড়ির জন্যও রয়েছে পৃথক পৃথক ছন্দ মিলিয়ে দলীয় গান।’
ওই গ্রামের গৃহিণী হাজেরা বেগম বলেন, ‘তীব্র গরমে গাঁয়ের শিশুরা বাড়িতে এসে কাদা-পানি দিয়ে খেলা করে গান গায়। বাড়ির গৃহিণীরা শিশুদের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়। সামান্য চাল-ডাল পেলেই তারা বেশ খুশি হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলার বোয়ালী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক লিটন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা মূলত কোনো ধর্মীয় রীতি-নীতি নয়। গ্রামীণ শিশু-কিশোরদের একটি প্রচলিত উৎসব। এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরেরা আনন্দে মেতে ওঠে, খিচুড়ি রান্না করে একবেলা খেয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এই অঞ্চলে এ রকম হয়ে আসছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি সা’দত কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও চর্যাপদ গবেষক অধ্যাপক আলীম মাহমুদ বলেন, ‘যখনই মানুষের ওপর কোনো দুর্যোগ নেমে আসে, তখন বিভিন্নভাবে তারা প্রকৃতির কাছে সহায়তা চায়। আমাদের দেশে বিশেষ করে মার্চ-এপ্রিলে যখন বড় ধরনের খরা দেখা দেয়, বৃষ্টির অভাবে মাঠ-ঘাট চৌচির হয়ে যায়, কৃষকের খেতের ফসল ও গাছপালা মরে যায়, তখন সাধারণ মানুষ রাতের বেলায় দল বেঁধে বন্দনা গান গেয়ে বাড়িতে বাড়িতে মাগুন মাপত। বন্দনা গীত পরিবেশন করে মূলত সৃষ্টিকর্তা বা প্রকৃতির কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করাই হচ্ছে মাগুন মাপা উৎসব হিসেবে পরিচিত। এটি বাঙালির পুরোনো দিনের সংস্কৃতি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) খাল খননের প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, কার্যাদেশ অনুযায়ী মাটি না কেটে কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। এ ব্যাপারে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেকিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ৷ গত ২৩ দিনে জেলায় শিক্ষার্থী, কৃষকসহ বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কৃষকের সংখ্যা বেশি। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, খোলা স্থানে কাজ করা মানুষ বজ্রপাতে বেশি মারা যাচ্ছে; বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে খোলা জায়গায় মানুষজন কাজ করার কারণে সেখানে হতাহতের...
৩ ঘণ্টা আগেপিরোজপুরে ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতাল চালু করতে ৯ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয় প্রায় দেড় বছর আগে। কিন্তু বিদ্যুতের সংযোগ এখনো দেওয়া হয়নি এবং বসেনি লিফট। এতে করে পুরোনো ভবনে ১০০ শয্যা নিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। সেখানে অধিকাংশ সময় রোগী ভর্তি থাকে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ। শয্যা না পেয়ে রোগীদের থাকতে হচ্ছে...
৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্য শিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ নভেরা আহমেদ। গত শতকের ষাটের দশকে তখনকার পূর্ববঙ্গে ভাস্কর্য শিল্পকে পরিচিত করে তোলার কাজটি শুরু করেছিলেন নিজের ভিন্নধর্মী কাজ দিয়ে। নিভৃতচারী এ শিল্পী একপর্যায়ে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমান অন্যতম শিল্পতীর্থ ফ্রান্সে। নারী এই ভাস্করকে নিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন...
৩ ঘণ্টা আগে