Ajker Patrika

ছাত্রদের প্রাণের তুলনায় সম্পদ তুচ্ছ: ডিবি কার্যালয়ে সোহেল তাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ২৩: ০২
Thumbnail image

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে দেখতে গিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। তবে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি। পরে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন এবং সমন্বয়কদের বিষয়ে খোঁজখবর নেন।

আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি ভেতরে ছিলেন। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সোহেল তাজ।

কেন ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিবেকের তাড়নায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের খোঁজ নিতে এসেছেন। ওই সমন্বয়কদের কেন এখানে আনা হয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না এবং কখন মুক্তি দেওয়া হবে—এসব বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তিনি কোনো প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব পাননি। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সোহেল তাজ বলেন, ডিবি আমাকে জানিয়েছে, এসব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ওনাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা না বললে, ওনারা নজরদারি করে নিরাপত্তাহীনতার কথা ভেবেছেন। যেহেতু নিরাপদ হেফাজতে আছে, আমি তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। প্রত্যুত্তরে আমাকে জানানো হয়, দেখা করতে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দেখা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমার তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, সমন্বয়কদের কখন নিরাপদ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হবে? জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে নির্দেশনা দেবেন, তখনই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’

নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাত সমন্বয়ক বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদসহ তিন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যান ডিবির কর্মকর্তারা। পরের দুই দিন আরও বাকি সমন্বয়কদের তুলে আনেন তাঁরা।

সোহেল তাজ বলেন, ‘এই ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যেসব ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুই নয়। ক্ষয়ক্ষতি কোনো বিষয় নয়। যে সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সেগুলো তো জনগণের করের টাকায় করা হয়েছে। এগুলো জনগণের সম্পদ। এগুলো হয়তো ভবিষ্যতে আবার গড়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু একটি প্রাণ—যেটা আমরা হারিয়েছি, একটি প্রাণও কি আমরা ফেরত পাব? এই প্রাণ কি ফিরে আসবে? আমাদের মনে রাখতে হবে, মুখ্য জিনিসটা কী? প্রাণের মূল্য কিন্তু কোটি কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমাদের ছাত্রছাত্রী ভাইবোনের বুকে যাতে আর একটাও গুলি না যায়। আপনারা বিরত থাকুন। এটা ঠিক নয়।’

সোহেল তাজ বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্টভাবে স্বতন্ত্রভাবে তদন্ত করে বিচার করতে হবে। এগুলোর জন্য যারা দায়ী, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ড করা যাবে না। এই সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে। সমাধান সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।’

আন্দোলনকারীদের প্রতি তাঁর কোনো বার্তা আছে কি না, এমন প্রশ্নে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন যেন বিনষ্ট না হয়। এই দেশ তোমাদের। এই দেশ তোমাদেরই গড়তে হবে। ডু নট লুজ হোপ (আশা ছেড়ো না)। সামনে ভালো দিন আসবে, আশা ছাড়া যাবে না। এই দেশ তোমাদের সম্পদ। তোমাদেরই গড়তে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত