Ajker Patrika

চোরাই তারের ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হন মিটফোর্ডের সোহাগ: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৫৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‎পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তার কেনাবেচা নিয়ে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে পরিচিতরাই ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে হত্যা করে।

‎আজ বুধবার বেলা ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের ‎এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোহাগ বিগত সরকারের সময় সাবেক এমপি হাজী সেলিমে ভাগনে পিল্লু কমিশনারের ছত্রচ্ছায়ায় পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। চোরাই তার কিনে অ্যালুমিনিয়ামের ফ্যাক্টরিতে বিক্রি করতেন। ১৭ বছর ধরে সোহাগ এই কাজ করেছেন। ৫ আগস্টের পরে ভোল পাল্টে অন্য রাজনৈতিক দলের দিকে আসেন। এখানে আরেকটি গ্রুপ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তখন ব্যবসায়িক একটি বিভেদ তৈরি হয় তাদের মধ্যে। তারা উভয় পক্ষই পূর্বপরিচিত। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও কোন্দল থেকে এই হত্যাকাণ্ড।

‎এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব থেকে হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, সোহাগকে একাধিকবার কংক্রিটের বোল্ডার দিয়ে আঘাত করা মো. রিজওয়ান উদ্দিন অভিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ নিয়ে এই মামলায় নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। গ্রেপ্তার আসামিদের কয়েকজন যুবদল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অবশ্য তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার কথা জানানো হয়েছে।

গত ৯ জুলাই বিকেলে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরোনো তারের ব্যবসায়ী যুবদলের কর্মী লালচাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এ হত্যা মামলায় নিহত সোহাগের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ওই এলাকায় ব্যবসা করায় ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে তাঁরা সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে এলাকাছাড়া করতে নানা রকম ভয় দেখিয়ে আসছিলেন। এরপর গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তাঁরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন। তাঁকে মারধর করতে করতে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের ভেতরে নিয়ে যান।

একপর্যায়ে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক বা ইট দিয়ে আঘাত করেন। মারতে মারতে তাঁকে বিবস্ত্র করে ফেলেন। একপর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে ড্রেনের পাশে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁর নিথর দেহ টেনে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, টিটন গাজী, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, মো. নান্নু, সজীব, রিয়াদ, রাজীব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, সিরাজুল ইসলাম, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার।

তাঁদের মধ্যে নান্নুসহ মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, মনির ওরফে লম্বা মনির, আলমগীর, টিটন গাজী, রাজীব ব্যাপারী, সজীব ব্যাপারী ও মো. রিজওয়ান উদ্দিন অভিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ী গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে ও ১১ বছরের ছেলে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলা-ভাঙচুর

জয়া আহসানকে নিয়ে খেপেছেন তৃণমূল নেত্রী, টালিউডে বাংলাদেশিদের নিষিদ্ধের দাবি

এনবিআর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কুৎসা, বরখাস্ত নিরাপত্তাপ্রহরী

অবৈধ অভিবাসী বিষয়ে কঠোর মালয়েশিয়া, ফেরত পাঠাচ্ছে বিমানবন্দর থেকেই

এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত