Ajker Patrika

‘ভুল চিকিৎসায়’ নারীর মৃত্যু, পালালেন চিকিৎসক-নার্স

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৪৭
Thumbnail image
নারীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার বেলা ১টার দিকে সদর থানার হলিল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এরপরই হাসপাতাল থেকে নার্স, চিকিৎসকেরা পালিয়ে যান।

মারা যাওয়া আছিয়া খাতুন (২৫) রাঙামাটি সদরের আমির হামজার স্ত্রী। হামজা পরিবার নিয়ে ভোগরা এলাকায় থেকে কাঁচামালের ব্যবসা করেন।

নিহতের স্বামী আমির হামজা বলেন, ‘গত কয়েক দিন হলো আমার স্ত্রী টনসিলের সমস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার মোস্তফা ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসি। তিনি বলেন, ‘‘যদি আপনারা মনে করেন অপারেশন করবেন, তাহলে যে কোনো দিন করতে পারবেন।’ ’ আমি বাসায় গিয়ে রাতে সিদ্ধান্ত নেই আজ অপারেশন করব। আমার ছোট সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আসি। বেলা ২টার পর অপারেশন করার কথা। আসার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করিয়ে হাসপাতাল থেকে বলা হলো ওষুধগুলো নিয়ে আসেন। এরপর আমি ওষুধ নিয়ে আসলাম। ওই সময়ে আমার স্ত্রী কথা বলছিলেন আমার সঙ্গে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওষুধ আনার সঙ্গে সঙ্গে দুজন নার্স আমার সামনেই ইনজেকশন পুশ করলেন। ইনজেকশন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার স্ত্রীর মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হতে শুরু করল। এ ২ মিনিটের মধ্যে মারা গেল। এটি দেখে ওই দুই নারীসহ সবাই পালিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী গলার টনসিল ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা ছিল না। তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রী মারা গেছে। এখন আমি ছোট দুই সন্তান নিয়ে কি করব। বাকি জীবন কীভাবে চলব। আমি এদের বিচার চাই।’

হাসপাতালের রিসিপসনের ভর্তি ফরমে দেখা যায়, রোগীকে ভর্তির সময় মহানগরীর উত্তর বিলাসপুর এলাকার এক ফার্মাসিস্ট ভর্তি করিয়েছেন। তাতে চিকিৎসক হিসেবে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তফা কামালের নাম লেখা রয়েছে।

এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে তাঁদেরকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের মোবাইল ফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ বিষয়ে গাজীপুরের সিভিল সার্জন মাহমুদা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি মাগরিবের পরেই যাই সেখানে। তেমন কাউকে পাইনি। যারা আছে কিছুই বলতে পারে না। কাগজপত্র চেয়েছি, যারা ছেলে আছে তারা কিছুই দেখাতে পারেনি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সেই সিস্টার ও ওটি বয় এর পেপারস নিয়ে আসতে বলেছি। এ ঘটনায় যদি কারও দোষ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত