Ajker Patrika

পাটুরিয়া–আরিচা ফেরিঘাটে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড়

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, ২২: ০৬
Thumbnail image

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাটে দক্ষিণ–পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, খোলা ট্রাক ও মোটরসাইকেলে চেপে ঘাটে আসছেন মানুষ।

উভয় ঘাটে কোনো রকম ঝুটঝামেলা ছাড়াই ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে নদী পাড়ি দিয়ে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও পাবনার কাজিরহাট হয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। পাটুরিয়া ফেরিঘাটে অপেক্ষমাণ যানবাহনগুলো সিরিয়াল অনুযায়ী সহসাই ফেরি পার হচ্ছে। তবে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় থেমে থেমে আসা গুঁড়ি বৃষ্টিতে যাত্রীদের অনেককেই নাকাল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।

পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খোলা ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, বাসসহ মোটরসাইকেলযোগে যাত্রীরা আসছেন ঘাট এলাকায়। সুবিধানুযায়ী লঞ্চ, ফেরি ও স্পিডবোটে নদী পার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছেছেন তাঁরা।

ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড়পাটুরিয়া ৩ নম্বর ফেরিঘাটে কথা হয় পূর্বাশা পরিবহনের যাত্রী রিপন মাহমুদের সঙ্গে। তিনি ঢাকা থেকে সপরিবারে যাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার গ্রামের বাড়িতে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের আগে এ ঘাট দিয়েই বাড়িতে যাই। আগে ফেরি পারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। ইদানীং এ সমস্যা আর নেই। পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে আমাদের ভোগান্তি চলে গেছে। নিয়ম অনুযায়ী সিরিয়াল মোতাবেক সব গাড়ি ফেরিতে উঠছে, যা দেখতেও ভালো লাগছে।’

সামসুর রহমান নামে আরেক যাত্রী জানান, তিনি ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালের ভিড় এড়িয়ে খোলা ট্রাকে পৌঁছেছেন পাটুরিয়া ঘাটে। এ জন্য তাঁকে গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া। তাঁর মতো অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাড়ির টানে ফিরছেন নিজ গ্রামে।

ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড়আরিচা লঞ্চঘাটে অপেক্ষমাণ যাত্রী রুস্তম মোল্লাসহ ২৫-৩০ জন। তাঁরা সবাই পোশাক কারখানার শ্রমিক। গাজীপুর থেকে বাস ভাড়া করে সহজেই এসেছেন আরিচা ঘাটে। লঞ্চযোগে ফেরি পার হয়ে যাবেন পাবনার বকুলপুরে। সবাই একত্রিত হয়ে রিজার্ভ বাসে কিছুটা ভাড়া বেশি দিলেও স্বাচ্ছন্দ্যে ঘাটে পৌঁছেছেন। ঘাটে এসে সহজে লঞ্চ পাওয়ায় তাঁরা আরও খুশি।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা আঞ্চলিক অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে পাটুরিয়া রুটে ফেরিতে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার অনেকটাই কমে গেছে। তারপরও ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে পাটুরিয়া ও আরিচা রুটে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে পাটুরিয়া রুটে ছোট-বড় মিলে ১৮টি ও আরিচা রুটে পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে।’

তিনি আরও বলেন, তবে নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বাতাসে সৃষ্ট ঢেউয়ে রাতে উভয় রুটে ফেরি চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। প্রাকৃতিকভাবে কোনো বিপর্যয় না ঘটলে ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে কোনো বেগ পেতে হবে না।

ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড়বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত কয়েক দিন নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় ঘাটের পন্টুনগুলোর র‍্যাম পানির নিচে তলিয়ে ফেরিতে যানবাহন লোড–আনলোডে বিঘ্ন ঘটে। ঈদ সামনে রেখে দ্রুত সবগুলো ঘাট লো ওয়াটার থেকে মিডওয়াটার লেভেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। আপাতত সবগুলো ঘাট ও পন্টুন সচল রয়েছে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ নুর এ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট, পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।

এ ছাড়া মলম পার্টি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি রোধে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের গঠিত একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছে। এযাবৎ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত