Ajker Patrika

‘কৃমি প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘কৃমি প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়’

বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত অনেক বড় রাষ্ট্র। দেশটি ক্রমান্বয়ে রাজ্যগুলোতে কৃমি প্রতিরোধ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। তবে জনবহুল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ খুব দ্রুতই কৃমি প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজেসের (এনটিডিএস) কমিউনিটি অ্যান্ড প্রাইমারি কেয়ার বেসড ইনভেনশনের চিকিৎসক আন্তোনিও মন্ট্রেসর। 

২০০৬ সাল থেকে চলে আসা কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের উন্নতি অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ বলেও মন্তব্য করেন ডব্লিউএইচওর এ প্রতিনিধি। 

আজ রোববার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মৃত্তিকাবাহিত কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন আন্তোনিও মন্ট্রেসর। 

ক্যাপশন: জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রোগ্রাম লিডার লিন লিউনার্দোআন্তোনিও মন্ট্রেসর বলেন, ‘বিশ্বের ১০০টি দেশে কৃমি প্রতিরোধ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এসব দেশে কৃমি রোগের প্রধান কারণ সাধারণত দূষিত পানি ও অনিরাপদ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো ও ঈর্ষণীয়।’

তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে শুরু হয়ে পরবর্তীতে ৬৪ জেলায় এ কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। আগে কৃমি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা কমে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশে অবস্থানরত মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপমা হাজারিকা বলেন, ‘কৃমি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের নিজস্ব পরিকল্পনা ও অপারেশনগুলো প্রশংসার দাবিদার। বিশেষ করে খুদে ডাক্তার প্রজেক্ট, যা শিশুকাল থেকেই স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। এতে করে শিশুরা এবং তাদের পরিবার এ বিষয়ে সচেতন হচ্ছে।’

এ সময় জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রোগ্রাম লিডার লিন লিউনার্দো বলেন, ‘কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে পুরো বিশ্বে জনসন অ্যান্ড জনসনের অনুদানের ৪০ শতাংশ পাচ্ছে বাংলাদেশ।’

কৃমি নিয়ন্ত্রণের বাংলাদেশের ‘ঈর্ষণীয় সফলতার’ উল্লেখ করে জনসন অ্যান্ড জনসনের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অনুদানের সবচেয়ে বড় অংশটি বাংলাদেশ পাচ্ছে, যা মোট অনুদানের এক-তৃতীয়াংশ। বাংলাদেশ যে সফলতা অর্জন করেছে তা অন্য দেশগুলোর জন্য অনুসরণীয়। এত জনসংখ্যার পরও এই সফলতা অর্জন করা সহজ ছিল না। ’

জনসন অ্যান্ড জনসন বাংলাদেশকে কৃমি রোগ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও এইচ আইভি ও যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে থাকে বলেও জানান লিন লিউনার্দো। 

দুই দিনব্যাপী এই সেমিনারের প্রথম দিন ছিল আজ, শেষ হচ্ছে সোমবার। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এক সময় দেশে কৃমির রোগের প্রকোপ ছিল অনেক বেশি। ২০০৬ সালে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এখন সেটির ব্যাপ্তি ৬৪ জেলায়। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী প্রায় ২ কোটি শিশুকে বছরের দুইবার কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে পরীক্ষা করলে ৮০ শতাংশ কৃমি রোগ পাওয়া যেত। এখন সেটি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এর জন্য মাল্টি সেক্টর কাজ করেছে। যে কারণে আমরা সফল হতে পেরেছি।’ মন্ত্রী এ সময় এই সামিটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

সামিটে কি-নোট উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ইএলএফ, এসটিএইচ, এলডি অ্যান্ড এসকেইপি, সিডিসি) ডা. এম এম আকতারুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য দেন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ডা. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। 

অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ইকবাল আর্সালান ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধণ জং রানা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত