Ajker Patrika

৭০ শতাংশ বস্তিতে নেই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা: কাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ মে ২০২২, ২০: ৪১
৭০ শতাংশ বস্তিতে নেই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা: কাপ

তিন দশকে ঢাকাসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে বস্তির জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ বস্তিতে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনব্যবস্থা খুবই নাজুক। বেসরকারি সংস্থা কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর (কাপ) জানিয়েছে, রাজধানীর ৭০ শতাংশ বস্তিতে নিরাপদ পানি নেই। সংস্থাটি বলছে, ঢাকা ওয়াসা নিম্ন আয়ের সম্প্রদায়ের জন্য একটি ইউনিট গঠন করেছে। এর মাধ্যমে ৩০ শতাংশ বস্তি এলাকায় ওয়াসা নিরাপদ পানি সরবরাহ করে। অথচ সরকারের প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালের মধ্যে সমস্ত বস্তিবাসীকে নিরাপদ পানি প্রাপ্তির আওতায় আনা হবে। 

আজ শনিবার রাজধানীর আদাবরের ইউএসটি কনফারেন্স রুমে ‘শহরের দরিদ্র সম্প্রদায়গুলিতে ওয়াশ পরিষেবার সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ফ্যান্সা বাংলাদেশের সহযোগিতায় সভার আয়োজন করে কাপ। 

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভার্কের সহকারী পরিচালক জামাল হোসেন কুলীন। তিনি বলেন, ‘বস্তি এলাকার পরিবারগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির চর্চা উল্লেখযোগ্যভাবে কম পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ বস্তির পরিবার প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য অবৈধ সংযোগ ও দূষিত পানি ব্যবহার করে। বস্তির একটি অংশ মলত্যাগের জন্য খোলা ও ঝুলন্ত টয়লেট ব্যবহার করে। খোলা টয়লেট কাছের জলাশয়, খাল ও ড্রেনে মারাত্মক দূষণ ঘটাচ্ছে।’ 

ওয়াসার সহকারী কাস্টমার রিলেশন অফিসার মো. ইমামুর রশীদ খান বলেন, ‘বস্তিগুলোতে নিরাপদ পানির জন্য ঢাকা ওয়াসার প্রায় সাড়ে আট হাজার বৈধ সংযোগ রয়েছে। বস্তিতে শতভাগ পানির সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ক্রমান্বয়ে বস্তি বাড়ছে, আবার অনেক বস্তি উচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে।’ 

কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত বলেন, ‘আশা করি, সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী শহুরে বস্তির মানুষদের জন্য সরকার নিরাপদ পানি ও উন্নত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করবে। মূলধারার মানুষের পাশাপাশি বস্তি ও রাস্তার মানুষের জন্যও বাজেটে বরাদ্দ বাড়াবে।’ 

কাপের সহসভাপতি মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে সভার আলোচনায় আরও অংশ নেন ইউআইইউর অধ্যাপক ড. হামিদুল হক, ইউএসটির নির্বাহী পরিচালক সালেহ মো. আনোয়ার কামাল, গবেষক আমিনুর রসুল, মানবাধিকার উন্নয়নকেন্দ্রের মহাসচিব মাহবুল হক, এইচডিডির প্রধান নির্বাহী সীমান্ত সিরাজ, ডিএনসিসির নারী কাউন্সিলর শাহীন আক্তার সাথী, বস্তিবাসীর অধিকার সুরক্ষা কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে আলোচকেরা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ওয়াশ সলিউশন, প্রতিবন্ধীদের কণ্ঠস্বর উত্থাপন এবং স্থানীয় পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার বিষয়েও আলোকপাত করেন। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ‘বস্তিতে শুমারি ও ভাসমান লোকগণনা ২০১৪’-এর তথ্য অনুসারে, দেশে বস্তির সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৩৮টি। এসব বস্তিতে সাড়ে ২২ লাখ মানুষ বসবাস করে। আর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে বস্তি রয়েছে ৩ হাজার ৩৯৪টি। এতে সাড়ে ছয় লাখ মানুষ বসবাস করে। তবে বেসরকারি হিসাব বলছে, ঢাকায় প্রায় ৫ হাজারের বেশি বস্তি রয়েছে। এতে প্রায় ৪০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। তাদের অধিকাংশ শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত